পদাবলিপ্রচ্ছদ

অনন্ত পৃথ্বীরাজ-এর কবিতা

গাঁটছড়া

তাকে দেখেছিলাম ছিটমহলার ধারে

এক বিকেলে সে গাই গরু খাওয়াচ্ছিল

আঁলপথ ধরে আমি যাচ্ছিলাম আমাদের গাঁয়ে

হঠাৎ চোখ পরতেই সে নিজেকে লুকিয়ে ফেললো

আমি বিমূঢ় চেয়ে রইলাম।

 

আমি বাড়ি পৌঁছালাম,

কিন্তু কোথাও যেন হারিয়ে ফেললাম নিজেকে

অহর্নিশি খাওয়া নাই, দাওয়া নাই, চোখে ঘুম নাই,

কেবলি দিবা স্বপ্নে বিভোর থাকি।

 

দু’টি চোখ তার চোখে বাঁধা পড়ে গেল।

 

তিথি

ঘুম থেকে জেগে দেখি উট পাখিটি কাছেই

আমাকে খাবার অপেক্ষায় ছিল,

বিরান বিলের এ দিকটায় জন-মানব নেই

উটের খাবার থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছি বটে

ক্ষুধা-তৃষ্ণায় মৃতপ্রায় নিজের খাবার কই পাই!

 

সব কথা মনে নেই, আমার থেকে জোর করে

ওরা তিথিকে তুলে নিয়ে পালাক্রমে রেপ করল।

আমার উপর চলাল অকথ্য নির্যাতন, তারপর

মরে গেছি ভেবে ফেলে দিয়ে চলে গেছে।

 

তিথি কোথায় জানি না, হয়তো মরে গেছে

অথবা, ওরাই ভোগের পর মেরে দিয়েছে।

 

নীল নিরবতা

সন্ধ্যাতারাদের সাথে মিতালী করি, রাতের আঁধারটা আরও গভীর করে দাও। দিনের ক্লান্তি ধুয়ে যাক, মুছে যাক সব অবসাদ। স্বপ্ন দেখা বন্ধ থাকবে কেন? নীল নিরবতায় হারাতে চাইব না কভু! আমাকে কৃপা কর প্রভু।

আফ্রিকার বিশেষ মানুষগুলোর মত আমাকেও তিলক পরিয়ে দাও। মানব যন্ত্রের মত রিমটে কন্টোল কর। আমি আহার নিদ্রা, জাগতিক সব; সব কিছু ভুলে যেতে চাই। ভুলে যেতে চাই, চারপাশের জগত-পরিচিত মুখ, আর নারীর কামুক প্রেম। সময়ে অপেক্ষায় আছি। ট্রিগারটা টিপলেই বিকট শব্দ হবে ,তারপর….., তারপর …… তারপর…..

 

চব্বিশের বীর সন্তানেরা

বর্ষার রৌদ্রকরোজ্জ্বল মধ্য দুপুরে

আগুন ঝরা তপ্ত আকাশ থেকে

মিছিলের ওপর অতর্কিত গুলি ছুড়ে

ওরা যাঁদেরকে খুন করে দিলো-

তাঁরা ছিলো আমাদের সন্তান।

 

জলজ্যান্ত ছেলেগুলোর-

কী সুন্দর নাম এক, একটি

আবু সাঈদ, মুগ্ধ, আর কত . . .

মিছিলে উদ্যোত তর্জনী তুলে  ওরা

স্বৈরাচার মুক্ত, স্বাধীন দেশ চেয়েছিল।

 

বেপরোয়া বেড়িয়ে গিয়েছিল উল্লাসে

মুক্তির মিছিলে; নাম তার বাংলা ব্লকেট

আর একবার মুক্তির স্বাদ এনে দিতে

বেড়িয়ে এসেছিল পিচ ঢালা পথে; অতপর

রক্তপিছল ফেলে নিথর দেহ রিকশায়।

 

মিছিলের ওপর অতর্কিত গুলি ছুড়ে

ওরা যাঁদেরকে খুন করে দিলো-

তাঁরা ছিলো আমাদের সন্তান।

 

 

সেই যে গেল

সেই যে গেল ফিরল না আর

মনটা শুধু কাঁদে

চোখ সমুদ্দুর বাঁধ মানে না

পড়ল নাকি ফাঁদে।

 

কপোল বয়ে অশ্রু গড়ে

মায়ের অবুঝ মন

সন্তান হারা পিতার মনে

দুঃখ সারাক্ষণ।

 

ভয় পেও না মাতা-পিতা

ওরা মৃত নয়

রক্ত দিয়ে মুক্তি দিলো

যুদ্ধ করে জয়।

 

আরও পড়ুন- রিক্তা রিচির কবিতা

ফলো করুন- পরমপাঠ সাহিত্য পত্রিকা