অনন্ত পৃথ্বীরাজ-এর পাঁচটি কবিতা
স্নিগ্ধ রাতের গল্প
কোনো একদিন তোমাকে কবিতা পড়ে শোনাব!
গোধূলি বিকেল অথবা স্নিগ্ধ রাতের সে গল্পে
তোমাকেই কিন্তু নায়িকা হতে হবে।
তোমার রুমালে কোন পারফিউমের ঘ্রাণ থাকবে না!
খুব চেনাচেনা শরীরী গন্ধ উন্মাদ করে দেবে আমাকে;
যেন হালকা শিশিরে মিলিয়ে যায় কুয়াশার অঘ্রাণ।
খাপ খোলা তলোয়ারের মতো জোড়া চক্ষু তোমার
কুচকুচে ভ্রুযুগল-বড্ড সুন্দর মুখশ্রী আর
হাসিটাও অনিন্দ্য একেবারে।
এ্যাই তুমি নাহ একটা আস্তো খুনি; তবে আসামী নও,
তাই কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে না তোমাকে কোনোদিন
কী এখনও বুঝলে না তুমি। উফ ! একদম বোকার হদ্দ
ঠিক আছে আর বুঝতে হবে না …
তুমি বাবা হতে চলেছ!
আগুন ছায়া
নদীর ঢেউ ম্রিয়মান, সাগর শুকিয়ে যায় ভাটার টানে
মনের নদীতে নৌকা চলে, ফসল খোয়া যায় বানে।
চর পড়ে যায় সাগর মোহনায়; নদীতে জোয়ার আর আসে না
ঊষর হয়েছে সম্পর্কের বাঁধ; আমরা কেউ কাউকে ভালোবাসি না।
পুড়ে গেছে শস্যের মাঠ দো-ফসলি জমি; কালো গাভি, পোয়াতী ছাগল।
বালিয়ারি ঝড়, পাতার ঘর্ষণে আগুন জ্বলে বন হয়ে গেছে ছারখার।
আগুনের বিপরীতে কালো ছায়ায় একজোড়া চোখ ভাসে
যে চোখ গলে না, পোড়ে না, শুধু অপলক চেয়ে থাকে।
মাটির ঘ্রাণ
আজলা জলে পেতেছি কারেন্ট জাল
শিকারি নই, তবুও যদি পাই এক পাল।
বন্যার জলে বেহুলা ভাসান খেলবো
রাত্রি, তুমি-নিকষ কালো,
কবিতার ঘোরে পড়বো।
সানজিদা’রা,
মুখোশ পরা হাসির খেলা খেলে-
প্রতিশোধের সুযোগ যদি মেলে।
একজনের হাসির মূল্য দিতে
ত্রিশ লক্ষ দিয়েছি বিসর্জন
মাটির অধিকার নিজের হাতে নিতে
মৃত্যুর কাছে নিজেকে করেছি সমর্পণ।
‘ও আমার দেখের মাটি,
তোমার পরে ঠেকাই মাথা’
মৃত্যুর উৎসব
কফিনের শুভ্র ঘ্রাণ নাকে লাগে
সাদা ধবধবে সুতির থানকাপড়
আতর লোবানের সুবাস মিশে আছে
সমবেত নিষ্প্রেহ নিরুত্তাপ চোখে করুণ বৃষ্টি-
আজ কোনো মাদকতা নেই ।
কলঙ্কঅধ্যায়
রাত্রির অন্ধকারে ঘিয়ে ভাঁজা লুচির স্বাদ;
পররমণীর দেহ সম্ভোগের মতো মনে হয়।
অভিশপ্ত নগরীতে জন্ম নেয় পাপের সন্তান,
কেউ কেউ পিতৃপরিচয় ছাড়াই বড় হয়
৭১ দুই লক্ষ মা-বোনের কলঙ্ক অধ্যায় ।
আরো পড়ুন- জামিল হাদীর কবিতা