পদাবলিপ্রচ্ছদ

আশরাফ চঞ্চলের কবিতাগুচ্ছ

ইতিহাস 

পৃথিবীতে কেবল আমরাই ঘষামাজার উস্তাদ
নিজের স্বার্থে
জন্মের ইতিহাসও
বদলে দিতে পারি!
চোরের তকমা নিয়ে পালাতেও জানি!
জয় বাংলা!

আত্মা

প্রতিবেশী গোবিন্দ একদিন বলল-
দাদা, কিছুই ভাল্লাগেনা
শুধু স্বার্থের জন্যই মাটি কামড়ে পড়ে আছি
আমার আত্মা পড়ে আছে ওই পাড়ে!

ফাঁদ

ইঁদুরের অত্যাচার ঘুমাতে পারিনা সারারাত
এখানে ওখানে কুটকুট করে কী যেন কাটে
শব্দটা খুব বিরক্তিকর!
আব্বা বললেন, বাজার থেকে কীট পতঙ্গের অষুধ কিনে আন
খেয়ে মারা যাবে।
কিন্তু চতুর ইঁদুরেরা সুস্বাদু টোপে ভুলেও মুখ রাখেনা!
অবশেষে স্টিলের তৈরী একটা খোপ কিনে আনলাম
তাতে বিছিয়ে দিলাম বিছানা
বালিশ!
এবার-
জয় বাংলা’র লোকদের মতো ইঁদুরেরা খোপে ঢুকে গেছে-
আমি তাদের আর ছাড়বোনা!

বিজয় 

সাজাপ্রাপ্ত আসামি জেল থেকে ছাড়া পাবার দিনটিকেই বেশি মনে রাখে
নিয়ন আলোয় রঙ চেনা খুব মুশকিল
১৬ ডিসেম্বর মানেই বিজয়
আমাদের আনন্দের দিন!

পরাধীন 

১৭৫৭ আমরা ভুলিনি
মীর জাফর
জগৎশেঠ
ঘসেটি বেগম
এখনও ঘৃণারপাত্র!
১৯৪৭ আমরা ভুলিনি
দেশ ভাগের নামে আমরা হয়েছি পরাধীন জাতি
পাকিস্তান শুষে খেয়েছে
পাঁজরের রক্ত!
১৯৭১ আমরা ভুলিনি
বন্ধুত্বের মুখোশ পরে যে দেশ বাড়িয়ে লোলুপকাতর দু’হাত
ক্ষুধার্ত শকুনের মতো আজও আমাদের খুবলে খাচ্ছে!
এখন ২০২৪ দেখছি
ডাইনি বুড়ী সহস্র যুবকের রক্ত খেয়ে
চুরি চামারিতে মেতে উঠলো
বললো, এটা নাকি তার বাপের দেশ
আঠার কোটি মানুষ ভাড়াটিয়া!
ক্ষমতার হাত বদলে এভাবে আমরা
স্বাধীনতার নামে বারবার প্রতারিত হয়েছি
সেই ৫৭ থেকে
এখনও পরাধীনই আছি!
বিজয় আসেনি!

নিখোঁজ 

তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে
জয় বাংলা ধ্বনির মতো
নিজেই
নিখোঁজ
হয়ে
যাচ্ছি-
ফিরে আসার উপায় নেই
নিজের ভূখণ্ডে
সরীসৃপের মতো কেবলই
ঢুকে
যাচ্ছি
অচেনা
এক গর্তে!