আশরাফ চঞ্চলের গুচ্ছ কবিতা
১.পাতালে যাবো
তুমি বললেই যাবো
মানবোনা বিধি নিষেধ
ধর্ম কর্ম ভুলে
যতোটা গভীরে বলো
এরচে’ গভীরে যাবো
তুমি বললেই যাবো
শরৎ মেঘের মতো উড়তে উড়তে
কাশফুলের মতো দুলতে দুলতে
আবেগের নরম ছোঁয়ায়
দেহ মন্দিরে ঢুকে যাবো
তুমি বললেই যাবো
সব বাধা বিঘ্ন পেরিয়ে
সৌখিন ডুবুরি হয়ে
ঝিঝি ডাকা দুপুরে
সন্ধ্যায়
নিশিতে
যখন বলবে তখনই
পাতালে নেমে যাবো।
২.ঠাপান্যা পুরুষ
সকলেই ভাবে আমি নাকি সহজ সরল
ওপাড়ার গোবিন্দের মত হাবাগোবা
যাকে বলে মাহোন্দা পুরুষ!
নারীরা তো আমাকে দেখেই ফষ্টিনষ্টি করে
হাবলা কাবলা ভেবে বিদ্রূপে মেতে ওঠে!
যে নারী আমার ঠাপানি খেয়েছে
কেবল সেই জানে আমি কতটা হাবাগোবা
আর হাবলা কাবলা-
আমরা ভেতরে বাস করে পৌরুষেয় চৌদ্দ পুরুষ!
৩. ভেতরের রূপ
আমি যতটা সুন্দর দেখতে
ভেতরে ততটা সুন্দর নই
পুরোটা কুৎসিতে ভরপুর!
ভদ্রতার মুখোশ পড়ে প্রতিনিয়ত বাজে কাজে লিপ্ত হই
কেউ জানেনা আদতে আমি কতটা ঠক
প্রতারক আর মিথ্যুক
আমার ভেতরটা আস্ত একটা শয়তান!
৪. সঙ্গম
আমি যদিও সঙ্গমে পারঙ্গম নই
তবু ভোদকায় লাগিয়ে ঠোঁট
দেহের পরতে মাখি
চুম্বনের বৃষ্টি
আবেগের খৈ ফুটাই উত্তাপে উত্তাপে…
আমি আচানক এই ঝড়েরদিনে
হাতড়াতে হাতড়াতে অতর্কিতে ঢুকে পড়ি
টসটসে আনার চেরিফলের বাগানে
তৃষ্ণায় বুক ফেটে গেলে
দ্রোপদী ভাঁজরেখায় চুমুক দিয়ে টেনে আনি দ্রাক্ষারসের অপার সমুদ্র!
৫. অবিশ্বাস
আমি সন্দেহ না করলেও
নিজের বউ-ই আমাকে সন্দেহ করে
আমি নাকি অন্য কোথাও আসক্ত!
অশান্তির আগুন নেভাতে গিয়ে
পবিত্র কোরআনে হাত রেখে
অনেকবার কসম খেয়েছি
তবু আমার প্রতি ওর একদন্ড বিশ্বাস নেই!
দূরে
একা
একা
থাকলে
বিশ্বাস কতক্ষণইবা ধরে রাখা যায়?!
৬. চিঠি
স্কুলে একটি মেয়েকে খুব ভাল লাগত
কথাটা লজ্জায় বলতে পারিনি
অথচ ভেতরে ভেতরে আমি যে কতটা অস্থির
নির্লজ্জ ও বেহায়া
সেটা কেউ জানেনা!
একদিন এক টকরো কাগজে কাঁপা কাঁপা হাতে লিখলাম-
‘সোনাভাণ, আমি তোমাকে ভালবাসি’
সেই থেকে আমাদের প্রেম- পিরিত
তা আজ অবধি চলছেই…
৭.অপেক্ষা
একজন নারীর কাছে একটামাত্র রাত চেয়েছিলাম
দেয়নি-
কাছে ডেকে নিয়ে চুপিচুপি বলেছিল
আজ সময় নেই সোনা
অপক্ষা কর।
অপেক্ষা করতে করতে আমি যে বুড়া হয়ে যাচ্ছি!
বুড়ি হয়ে যাচ্ছে অনুপমাও!!
এভাবে দিন মাস বছর যায় আর
কিছু কিছু অপেক্ষা অপেক্ষার জায়গাতেই থেকে যায়।
৮. নেকেট মুভি
ছোট্টকালে পাশের পাড়ায় ভিসিআর দেখতে গিয়ে
চোখ আটকে গেল
নেকেট মুভির পর্দায়
সেই যে শক খেয়েছিলাম তা আজও জমা আছে
বুকের গোপন কামরায়।
কখনও এমন সুযোগ পেলে আমিও
ওই নেকেট মুভির নায়ক হয়ে যাই!
৯. পাপ ও প্রার্থনা
পাপ করার পরেই অনুশোচনা আসে
ভেতরটা ভয়ে গলে যায়
আমরা প্রার্থনায় মেতে উঠি-
একবার ওয়াজে গিয়ে শুনে এসেছি
প্রার্থনায় পাপ কমে।
১০. সুলেখা
চাপা কান্না জমে আছে বুকের ভেতর
উত্থিত শিশ্নের ডগায় যেভাবে
উম্মুখ হয়ে থাকে রসমাখা শুক্র!
ভয়ে ভয়ে চুপমেরে আছি
সুলেখা ফিরেনি রাতে-
অমন যুবতি পেলে
যে কেউ খুলে নেবে
দেহের মোড়ক!
পকেটশূণ্য করে সে গেছে
অভুক্ত পুরুযের দুয়ারে।
আরো পড়ুন- জামিল হাদীর কবিতা