একগুচ্ছ কবিতা-জামিল হাদী
গল্পের গরু
গল্পের গরু গাছে উঠতেই পাখি হয়ে গেলো।
সেই পাখি উড়ে গিয়ে পড়লো সংসদ ভবনের ছাদে।
ছাদ ভেঙে পড়লো স্পীকারের মাথার পাশেই।
পাশ থেকে সরে গেলো গার্ডের দল।
দলবদ্ধ হয়ে পাখিটাকে গালাগাল করতে লাগলেন সাংসদেরা।
একটা পর্যায়ে সংসদ থেকে মার্চপাস্ট করতে করতে তারা প্রতিবাদ নিয়ে পৌছে গেলেন সেনা ছাউনিতে।
ছাউনিতে তখন দুধ দোয়ানো হচ্ছিলো পোষা গরুদের।
গরুরা সেদিন দুধ দিলো না সাংসদদের দেখে।
তারপর সাংসদদের দোয়ানো হলো।
দোয়ানো শেষে তারা গাছে উঠে গেলেন।
গাছে উঠেই তারা পাখি হয়ে গেলেন…
শ্যাওলার স্বাধীনতা
আমার মার কাছে স্বাধীনতা মানে ছিলো নানীর শেষদিনগুলোতে তার পাশে থাকা। মাত্র তিনমাস।
মাত্র তিনমাস থাকতে পারলেই মা বলতে পারতেন আমি স্বাধীন!
আব্বার কাছে স্বাধীনতা মানে ছিলো পুরোনো বন্ধুদের সাথে আর একবার মাছ ধরতে যাওয়া। সর্বোচ্চ হলে আট ঘন্টার একটা স্বাধীনতা।পাননি আব্বা। তবু দেখেছিলাম আব্বা চলে যাওয়ার পরও তার মুখজুড়ে মায়াবী হাসির আভা। পরাধীন মানুষের হাসিও সুন্দর হয়।
আমরা আমাদের মা,বাবার মতো অল্পে স্বাধীন হওয়া মানি না। আমাদের অনেক স্বাধীনতা দরকার৷ আমরা প্রতিদিন সকালে কাকের মতো বেরিয়ে পড়ি স্বাধীনতা খুঁজতে, সন্ধ্যা হলে ফিরে আসি এক গাদা স্বাধীনতা নিয়ে। যদি এই স্বাধীনতা নিয়ে মুখ খুলি, আমাদেরকে মুখে করে নিয়ে যায় A ক্যাটাগরির আরো বেশি স্বাধীন কিছু লোক।
আমরা তাদের মুখে ঝুলতে ঝুলতে গন্তব্যে পৌছানোর আগে ভাবতে থাকি – আরেকবার যদি দেখতে পেতাম ছোট ছেলেটার মুখ। মাত্র পাঁচ মিনিটের মতো। ইশশ! আমি বুক টানটান করে বলে দিতাম – আমি স্বাধীন!
১৫ই ডিসেম্বর | ২০২৩
বিজয়গাঁথা ২.০২৩
১৬ই ডিসেম্বরের লেখা লিখতেছিলাম।
লিখতেছি
ছিঁড়তেছি
ছিঁড়তেছি(!), লিখতেছি, কলমের নিব দিয়ে পৃষ্ঠা ফুটো ফুটো করে ফেলে দিতেছি।
অথবা তরকারীর ঝোলের গন্ধ মেখে থাকা আঙুল মুছতেছি।
অথবা পুড়ায়ে ছাই বানায়ে কমোডে ফেলে ফ্ল্যাশ করে দিতেছি।
ঘরের ঝুল পরিষ্কারে লেখাগুলো খুব কাজে দিচ্ছে।
রান্নাঘরের তেল চিটচিটে র্যাশ ওঠানোতেও যুগান্তকারি আবিষ্কার হয়ে উঠতেছে আমার লেখাগুলো।
মেথর ডেকেছিলাম।
সেপটিক ট্যাংক সাফ করাবো।
কাছে ব্লিচিং পাউডার কেনার টাকা ছিলো না।
লেখাগুলো কাজে লাগালাম।
ইচ্ছেমতো কানা, কালা আর বোবা সেজে থাকতে পারাদের দ্যাশে আমার কবিতার কাজ এইসবেই, এতোটুকুই।
আরও পড়ুন- জামিল হাদী’র কবিতা