পদাবলিপ্রচ্ছদ

একগুচ্ছ কবিতা- জামিল হাদী

বিজিএম কেবলই এসরাজময়

আমার এতো সময় নেই।
এতো জরুরি না ভালোবাসা পাওয়া।
আমার অবসর কম। অথবা নেই।
সমুদ্রের চরিত্রে অভিনয় করা যায় কিন্তু আক্ষরিক অর্থে সমুদ্র হওয়া যায় না।
আমি দুটোই হয়েছিলাম। যদিও আমার নিজেরই বিশ্বাস হয় না এখন।
চুপচাপ সমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে জটলাহীন জীবন কাটিয়ে যেতে পারা সবচেয়ে বেশি অসম্ভব।
আমি সেটিও পেতে চলেছি।
উইশলিস্টে নতুন কোনো গান নেই।
আমিই তো গান! জানার পর থেকে আর এককণা আফসোস নেই আমার।

প্রতিনাদ

স্মৃতি গুছিয়ে রাখি
বৃষ্টি নামানোর জন্য।
আমি নিদারুন ভীতু মানুষ
ঠিক রংধনুর বিপরীত
যে রংধনু জানে কীভাবে দেখাতে হয়
আর্তনাদের রঙে একাকার হওয়া অরণ্য।
স্মৃতি গুছিয়ে রাখি…  বৃষ্টি নামানোর জন্য।
মেঘগুলো ভাসমান শবদেহের যেন!…যেন পরিত্যক্ত অতিথিশালা একেকটা।
আমি পদব্রজী মানুষ,
স্বপ্ন পায়ের তলে দলে দিয়ে হাঁটি অক্লান্ত।
তাই হারিয়ে ফেলায় বা
কিছু পেয়ে ফেরত দেওয়ায় করি না কার্পণ্য।
শুধু…
স্মৃতি গুছিয়ে রাখি…  বৃষ্টি নামানোর জন্য।
ঝড়ের তান্ডবগীত শুনি
বাতাসের ভায়োলিন ভালোবাসেছে আমায় খুব।
তাইতো বাতাসের পাখা ধার করে উড়ি ছাড়িয়ে লোক-লোকারণ্য।
কেউ স্বীকার করে না তবু নিশ্চিত জানি,
মানুষ স্মৃতি গুছিয়ে রাখে…  মূলতঃ বৃষ্টি নামানোর জন্য।
আমার দলছুট একাকীত্বেরা ফিরে ফিরে আসে ঝাঁঝালো প্রতিধ্বনির মতো।
গুজবে কান দিও না।
একটা হলুদ রোদের ভোরে আমি জেগে যাবো নিজ থেকে।
সেইদিন আমি অবলীলায় জেনে যাবো
কোথায় কতটুকু তুমি লুকিয়ে রেখেছো তোমার-আমার চিহ্ন।
অপেক্ষা করো… চাতকী হও।
যেহেতু চাতক জেনে গেছে…
আমরা স্মৃতি গুছিয়ে রাখি…
কয়েক ফোঁটা বৃষ্টি নামানোর জন্য।

যক্ষের মন

যেটা শুনতে এসেছিলাম শুনতে পাইনি।
খুব ঔৎসুক্য নিয়ে যেটা দেখতে এসেছিলাম, তা দেখার আগে আমি গেলাম অন্ধ হয়ে। চোখ যদিও ঠিকই ছিলো।
বেশ দূর থেকেও দেখা যাচ্ছে।
দুধের ওপর গাঢ় সর পড়েছে।
যেন প্রতিবেশী দুই ঘেরের সীমানা বরাবর আইল চলে গেছে স্পষ্ট।
আমি সেই আইলে বসে ভাবি, আলোর অন্ধকার দিকটায় কে পেয়েছে বাঁশিওয়ালার চরিত্র? হ্যামিলনের।
ভাবি, অন্ধকারের আলোকিত গোপনীয়তায় কে পেয়েছে
শান্তি পুরষ্কারের চরিত্র?
কার ঘাড়ে মাথা রেখে বন্দুক বোবা হয়ে গেছে চিরতরে।