পদাবলিপ্রচ্ছদ

একগুচ্ছ কবিতা- দীনা আফরোজ

অ- এক

অনেক দিন আমাদের দেখা নেই

বৃষ্টি আসার কথা ছিলো না, তবুও

জলের জন্য টইটম্বুর হয়ে আছে মেঘ

সকল নক্ষত্ররা পুড়ে গেলে

মেঘ কি গলে যায় বলো?

 

অ- দুই

অপেক্ষায় আগুন জ্বালিয়ে ছিলাম কফির মগের ভেতর,

ধোঁয়ার ব্যাপারটা অবুঝ কিন্তু শান্ত নয়

মুখে তুলতেই ঠোঁটের চারপাশে জড়িয়ে গেলো

অথচ বিপরীতে শূন্যতা জাগিয়ে বসে রইলো।

 

অ- তিন

অচল পথ চলমান হয় না ভেবে ফেলে যায় সবাই

ভেবে দেখো পথ কখনো অচল হয় না!

শুধু আমরা ভাবি বলে উচ্ছল পথ

নির্ভরতা হারায়, চলতে ভুলে যায়

কখনো সেই পথকে রাস্তায় ফিরিয়ে আনতে পেরেছো কি?

 

অ- চার

অজানা কে ছিলো! আনন্দ না বেদনা

যদি বলি প্রম, যাকে ছুঁয়ে এসে মিলিয়ে গিয়েছিলো

তৃতীয় শব্দটি

সেটা হলো “ঘৃণা”

আবার যখন ঘৃণার সাথে পরিচয় হবে

অজানা হয়ে উঠতে পারে তুমি শব্দটি

তোমার হয়ে উঠতে পারার যন্ত্রণারা আমাকে তাই বলে গেলো…

 

 

অ- পাঁচ

অদেখা তোমাকে বলছি!

যদিও বহুবার দেখা হয়েছে আমাদের

এই অচেতন আকাশের নিচে ঘুড়ির মতো

ঘুরে ঘুরে ফিরেছি একটা লম্বা সুতোর প্যাঁচে

যা খুলতে গেলে দেখতে পাবে তুমি,

বন্ধ চোখ তোমার

আর দূরে নেশার বীজ আমাকে সৃষ্টি করছে উর্বর।

 

অ-ছয়

অংশ বেঁকে গেছে আকাশ থেকে মাটিতে

ঘুমিয়ে ছিলাম আমার এলায়কা তখন

বাবা যে আকাশ জুড়ে ফুটে থাকা তারা হয়ে যায়

শুনতে শুনতে ঘুম চলে গেছে আরও গভীরে

তোমারও কি ঘুম হয় তারায় খুঁজতে যাওয়া বাবার কুলে!

আমিও একদিন সন্ধ্যা তারায় সমস্ত আকাশ জুড়ে রাজত্ব করবো

সে সময় দেখো আকাশকে দেবো না, বাজ পরতে।

 

অ- সাত

অন্য কেউ কেনো তোমার হবে?

আমি কিসে কম তবে!

একটা কালো ঘরে রোজ ডুব দিয়ে

চাঙ্গা করি বুকের ভেতরটা;

তারপর পড়তে থাকি তোমার সমুদ্র ভ্রমনের গল্প

ঐ যে লবন যা কি না এসে বসে গেছে চোখের বারান্দায়

যখন তখন উপচে পরে ঢেউ, আঁচড়ে পরে দৃষ্টি থেকে

বিষয়টি এমন ছিলো যে তুমি থেকে আমি হতে না পারলেও

আমরা হয়েছিলাম

অনেক বছর আগে..

 

অ-আট

অরাজকতা চলছে চলবে, ভাষা সুচারু হওয়ার আগে

তোমাকে থামিয়ে দেয়ার জন্য কাঁপানো হয়েছিল একটা স্তম্ভ

যদিও ভ্রু কুটে এগুতে চাইছো তুমি,

তুমিও থেমে যেতে পারো, তাই ভাবছিলে বুঝি!

কিন্তু ভেবে কি আর ভাবনা কে দমিয়ে দেয়া যায়;

রোজ জ্বলে উঠে নিভে যাও, আবার জ্বলতে থাকার ইচ্ছে হলে

নিভে যাওয়ার কথাটাও মনে পড়বে তোমার

তাই জোনাকির কবিতাগুলো এবার শুনাতে পারো

কবিতা শুনিয়েই জাগিয়ে তুলতে হয় ঘুমন্ত কে…!

 

অ- নয়

অসম্পূর্ণ কথা গুলো পূর্ণ করার প্রয়োজন কারোর থাকে না

তেমনি আমারও ছিলো না, তবে খোলা মাঠের ঘাসের উপর

বসলে মাথার উপর যে থাকে তাকে যদি নীল বলি,

হলদে দুপুর বেলায়, নদীগুলো শুখিয়ে গেলে,

রঙের উদাস দুঃখ গুলো আমার দরোজায় কড়া নারছে কেনো বলুন তো!

 

আরও পড়ুন- শাহিন চাষীর কবিতাগুচ্ছ