পদাবলিপ্রচ্ছদ

একগুচ্ছ কবিতা- শিশির আজম

নেপাল

নেপালি মেয়েদের মুখের গড়ন খানিকটা গোলগাল

আর মিণ্টি

জীবনাচরণে ওরা সহজসরল

কোন প্যাঁচ নাই

উচ্চতা মাঝারি

কিন্তু নেপালি পাহাড়গুলার নিঃশঙ্ক সব ঝরণা ওরা পারে নাই

লুকায়ে রাখতে

ওদের ভিত্রে

হ্যা

যা ওরা লুকায়

সেইটা খুঁইজা পাওয়া কিন্তু সহজ না

এক নেপালি মেয়ের লগে

দেড় সপ্তাহ আগে আমার দেখা হইছে

এখন

এক লগেই আমরা আছি

আমি অনুভব করতেছি নেপাল দেশটা কি মিষ্টি

আর বিপজ্জনক

 

আমাদের সূর্যের প্রকৃতি

এপ্রশ্ন করো না সূর্য কেন সকাল সকাল দেখে নেয় ফণীমনসার বন

মৃতদের ইতিহাস লিখতে গিয়ে প্রকারান্তরে আমরা

নিজেদের শঠতা চৌর্যবৃত্তি আর বীর্যমোক্ষণের প্লেট পেতে ধরি

 

সন্ধ্যায় সমুদ্রযানে ঘুমিয়ে পড়ার পর

মনে করো ভোর অব্দি সূর্য বুঝি আর উঠবে না

তার কি আসক্তি নেই অনুপ্রেরণা নেই বাংলার ঋতু আর ঋতুরক্তে

 

কি কানাঘুসা কি মরা সলতের বাজ সব মিথ্যে হয় না

বলা নেই কওয়া নেই হঠাৎ নিগ্রো কুয়াশা

হঠাৎ হাসপাতালে কৃষিসমবায়কেন্দ্রের পোয়াতি হাসগুলো

 

যা হোক এতোদিনের অভ্যেস লক্ষ্মীর পাঁচালী

কি বা করার আছে সূর্যের আমাদের মধ্যবিত্ত সতীচ্ছদ

চেটে দেয়া ছাড়া

 

মাতালের কিচ্ছা

মদ খাবো বলে জমি বেইচ্ছি

বউ চলে গেছে

মেয়ে নিরুদ্দেশ

তোর তাতে কি

 

বেঁচে আছি না কি মরে গেছি

এটা কে বলে দেবে

তুই

না কি তোর বাপ

 

বহুদিন পাহাড়ী বাতাসের শিখায় হাঁটলাম

বাজের সঙ্গে

পাটলিপুত্রের জেলেকন্যা

তার কাঁটাঝোপ আর ঘামের গন্ধ

 

বকের ঠ্যাঙে দাঁড়িয়ে কী দেখিস বাপ

ইদিকে আয় ইদিকে আয়

গলায় এট্টু ঢাল দিকিনি

আমরা মাতাল

মাতাল

টিকে আছি টঁসে যায়নি

 

আলপিন

আলপিন আমাকে বলে ভালবাসতে

অশুদ্ধ এই জগৎকে

এই জগৎ অশুদ্ধ

আবৃত দরজাগুলো আগুনের গন্ডিতে ধ্রুবতারা

 

আলপিন ভাবে আমি একটা গাছ

আগুনের শিরাউপশিরাগুলোর ভিতর

আমি ভাবি আমি যদি হতে পারতাম আলপিন

আলপিনের ভিতর নির্জন সূর্যের পর্বত

 

আমার বাবা বুকে গেঁথে রাখতেন আলপিন

বাবার বাবাও

নিস্তব্ধ গুঞ্জনময় রাতের মতো ধারালো

আর ছোট ছোট অধৈর্য পাথরে বিরাট বিরাট খাঁদ

 

তুমি কী পার আলপিন

বুকের ভিতর ক্ষত তৈরী করা ছাড়া

সবাই ক্ষত দেখতে পায় বুকের ওপর

তোমাকে দেখে না

 

আদর্শ জ্ঞান বুমবুম

চিৎ করো

ধাক্কা দাও

চিৎ রাখো

ধাক্কা দাও

 

অন্তত তিরিশবার এইটা পারলে

ভবিষ্যৎ ভালো

 

চিৎ করো

ধাক্কা দাও

চিৎ রাখো

ধাক্কা দাও

 

অন্তত পঞ্চাশবার এইটা পারলে

পরাজয় শোধ

 

চিৎ করো

ধাক্কা দাও

চিৎ রাখো

ধাক্কা দাও

 

অন্তত নব্বইবার এইটা পারলে

দেশপ্রেম পরিশুদ্ধ।

 

আরও পড়ুন- আশরাফ চঞ্চলের কবিতা