পদাবলিপ্রচ্ছদ

একগুচ্ছ কবিতা- তাজ ইসলাম

মশারি জীবন

মাতৃগর্ভের দেয়াল ভেদ করে

সদ্রোহে বেরিয়ে এসে পায়

পৃথিবীর বিস্তীর্ণ  প্রান্তর।

 

তারপর মুক্তপাখির উড়াল

উড়তে উড়তে পৃথিবী

খাঁচায় বাড়ি খায় ডানা।

 

পৃথিবী মূলত বিস্তৃত কারাগার।

দেশ মহাদেশ নামে মানচিত্রের

আঁকাবাঁকা রেখা যেন প্রশস্ত জেলখানার

সজ্জিত ওয়ার্ড।

মানুষ এখানে থাকে বিভিন্ন মেয়াদি আসামি।

সংসার!  জেলের ভিতরে এক মায়াযুক্ত জেল

মিষ্টি করে সংসার বলে জেলসূত্রে তা সেল

সুখ ও উপদ্রবহীন ঘুমের আশায়

স্বেচ্ছায় বরণ করে মশারি জীবন।

 

ফাওয়াইলুল্লিল মুসল্লিন

অথবা দুর্ভোগ গ্রস্ত নামাজি

দুর্ভোগ সেইসব নামাজির

যারা নামাজ আদায় করে

নিয়মিত পাঁচবার

আর মিথ্যার সাথে করে ঘর সংসার।

মিথ্যা তাদের বাপ মা,মিথ্যা তাদের ভোষন বেশন।

 

ঘৃণা সেইসব নামাজির প্রতি

যারা জবরদখল করে অপরের জমি

যাদের হাতে নিহত হয় আত্মীয়ের হক

দ্বিখণ্ডিত হয় অন্যের সীমানা

ভোজবাজ করে হজম করে

ওয়ারিশের অংশ

তাদের জন্য মুঠোমুঠো অভিশাপ।

 

সমস্ত ছিঃ ছিঃ ঐসব নামাজির প্রতি

যারা আইনকে মান্য করে কতিপয় ভাঙারি দোকানির মতো

বিশ কেজি মেপে আনে পঁয়ত্রিশ কেজিকে

নিজের কব্জায় আসার পর স্বাক্ষী নাই

যুক্তিতে  নিজেই  হয়ে যায় সেসবের হারামের মালিক।

অথচ মাপে কমবেশি করা ইমানদারের চরিত্র হতে পারে না।

হতে পারে না কোন মুত্তাকি নামাজির বৈশিষ্ট্য।

 

অভিশপ্ত নামাজিদের চিনে রাখা সহজ

হিংসা যাদের ঠোঁটে ঠোঁটে ঝুলে

জিঘাংসার চোখে পোড়ে ফেলে চারপাশ

লোভের ছুরিতে কতল করে বোনের মিরাছ

বাসী চুলা থেকে ভাঙা কুলায় রাখা সকালের ছাই নিক্ষিপ্ত হোক

ঐসব নামাজির দিকে,ঐসব বেখেয়াল নামাজির প্রতি।

 

ফাওয়াইলুল্লিল মুসল্লিন তারা

যারা সওয়াবের আশায় সেজদা ঠুকে

ঠুকে বেখেয়ালে নষ্ট করে বান্দার অগনিত হক।

এমনকি মসজিদের নামে দখল করে অন্যের জমি।

 

তারা ধ্বংস হোক আবু লাহাবের দুইহাত

ও তার উপার্জিত সমুদয় সম্পদের মতো।

 

দুর্ভোগগ্রস্ত মুসুল্লি তারাই

যারা নামাজের বৈশিষ্ট্য নিয়ে বেখবর

এবং তারা চিত্র প্রদর্শনীর মতো আজীবন নিজেদের নামাজি হিসেবে

কেবল দেখিয়েই যায়।

আর স্বার্থের সময় গুয়ে গোবরে একাকার করতেও করে না দ্বিধা।

আয় প্রভু তাদের

দ্বীনের সঠিক পথে চলার দাও ইমানি হিম্মত ।

হৃদয় প্রসারিত করো। ইমান ও তাক্কওয়ার বৃক্ষে তাদের ফুল ফুটুক।

নামাজ তাদের মিরাজ করে দাও হে আমার রব!

 

আরও পড়ুন- রায়ান নূরের কবিতা