একগুচ্ছ কবিতা- শ্যামল দাষ
দূর হ দুঃসময়
পোস্টারে আঠা নাই ফলে থাকে না
দেয়ালে পোস্টার পুরোটা সাঁটে না
যদিও বা সাঁটে লোকে তা পড়ে না
শুধু মিছিলের পর মিছিল চলে যায়
আমি লিখেও আর বোঝাতে পারি না।
ফলের সন্ধান
এবং আরো অনেক আবর্জনা ঘেঁটে অনেক
সময়ের পথ পরিভ্রমন শেষে পাওয়া গেছে
অতিশয় ক্ষুদ্র এক ঝলমলে তিল থেকে মানে
আরো বড়ো কোনো তালের সন্ধান পেতে হলে
যেতে হবে অতি দূর দুর্গম দূরের পথে গাঁয়ে
সেখানে তাল পুকুরের অথৈ গভীর তলদেশে
জলের নিচে লুকানো আছে কৌটার ভেতরে
ভবিতব্য বলে এমন এক কালো নীল ভোমরা
সারা দিন ধরে যারে খুঁজি আমি তুমি দিবা নিশি
পেতে হলে যেতে হবে দূরে পাকা ফলের সন্ধানে।
পাখাল
( চিত্রশিল্পী এম এ খালেক)
আমাদের শহরেও এক অচিন পাখিওয়ালা আছে
মাছরাঙা দোয়েলের পাশে মাঝে মাঝে উড়ে
যায় বলে কিছু মথ তেলাপোকা চামচিকা রাখে
আরো অতি বিস্ময় রয়েছে এই পাখালের কাছে
জোনাকি পোকার সাথে মিশে কিছু উইপোকা
মশা মাছি ঘুণপোকা ঘোড়াপোকাও সে পোষে
বিস্তর বনানী মাঠ ঘেঁটে প্রতিদিন তিনি অবসরে
বহু রঙ পাখি আর পোকাদের ধরে নিয়ে আসে
ভয়ানক এই স্বপ্নচারী পাখালের কাছে আকাশের
উড়ে যাওয়া মেঘও বুঝি হায় পাখি হয়ে আসে?
উত্তরের হাওয়া
মানুষ ও প্রকৃতির এমন জটিল জটলা এড়িয়ে
তোমার ধারে কাছে পোঁছানোই বড়ো দুষ্কর
পথের পাশের নানা ঝোপের আড়ালে রক্ত
জবার মতো সতর্ক পাহারায় থাকে রাঙা চোখ
ধমকের সুরে শাসায় উত্তরের কন কনে হাওয়া
আমি যেনো ভিন্ন পথ ঘুরে যাই চিন্তা বদলাই
নিঃসঙ্গ আমাকে পেয়ে ভয় দেখায় সিঁদুরে মেঘ
আমি যেনো কোনো দিনও গন্তব্যে না পৌঁছাই
এ সমস্ত কিছু নয় হে মহীয়সী সময়। এ সবই
অতিক্রম করে করে তবেই না তোমাকে পাওয়া।
ফসিল ভাষণ
মুদ্রাই যদি খেয়ে ফেলে সব ভাবের
প্রকাশ কি লাভ বল মা গতর ঢেলে। আমাদের
দুঃখ বুঝবে এ দেশে জন্মায়নি এমন বাপের ছেলে।
আরও পড়ুন- অংশুমান কর এর কবিতাগুচ্ছ