পদাবলিপ্রচ্ছদ

একগুচ্ছ সুফি কবিতা- এনামূল হক পলাশ

১.

সম্পর্ক দুই ধরনের,

একটি সামাজিক আরেকটি আত্মিক;

অনেকেই বুঝতে চায় না,

দুটিরই আছে আলাদা আলাদা দিক।

 

২.

কলুষিত আত্মার কাছে

আত্মিক সম্পর্কের মূল্য নেই,

এরা জগতের বহির্ভাগ দেখে

হারিয়ে ফেলে খেই।

৩.

আধ্যাত্মিক সম্পর্ক কারো সাথে

প্রকাশ করো না,

কেউ কেউ এসব সম্পর্কের

অপব্যাখ্যা করবে।

৪.

আমি অনেক নারী পুরুষের সাথে

আধ্যাত্মিকভাবে সম্পর্কিত,

এই জন্য আমি নিজের প্রশান্ত

আত্মার কাছে গর্বিত।

৫.

মানুষের জগত দুই ধরনের

তার মধ্যে একটি বস্তুগত,

অনেকে খবর রাখেনা ভেতরে আছে

এক জগত যা শুধু ভাবগত।

৬.

বস্তজগতের সীমা আছে

ভাবজগতের নেই,

অসীমের এই জগত ভ্রমণে

অলক্ষে হারাই খেই।

৭.

বোকার মতো বহন করেছি জীবন

কবর থেকে নিতে পারিনি শিক্ষা,

অসীম ক্ষুদ্রতায় থেকেও অভিজাতদের

মৃত্যু আমাকে দিতে পারেনি দীক্ষা।

৮.

কে এড়াতে পারবে তাকে?

জীবনের দায় শোধ হয় মৃত্যু দিয়ে।

এই দায় ছেড়ে দিবে কাকে?

তবুও পার করি দিন অহংকার নিয়ে।

৯.

বিশ্বাসী অথবা অবিশ্বাসী

কেউ মুক্ত নয় জীবনের দায় থেকে,

বিবাদ আর সংঘাতে যায়

তারা নিজেদের মূল্যবোধ চাপা রেখে।

১০.

ধর্ম কাউকে মুক্তি দিবে না

মুক্তি ধর্মকে সাথে নিবে না।

১১.

তোমার উপাসনা ব্যর্থ হবে

প্রেম যদি সঞ্চয়ে না রাখো,

সৃ্ষ্টির প্রতি সদয় না হলে

পাবেনা তারে যতোই ডাকো।

১২.

আমি যখন শুন্যতা অনুভব করি

মহাকাশে উড়তে পারি,

এই অনুভব মেঘের চেয়ে হালকা

অথচ পাথরের মতো ভারি।

১৩.

তামাম পৃথিবী ছন্দময়

আছে এক সুরের মুর্চ্ছনা,

অনেক সময় তা তুমি

অনুভব করতে পারো না।

 

১৪.

সুর এবং সঙ্গীত মানুষের

স্বতস্ফূর্ত উচ্চারণ,

কিছু নির্বোধ এগুলোকে

করে থাকে বারণ।

 

১৫.

পৃথিবীতে দুই ধরণের মানুষ আছে

বিশ্বাসী এবং অবিশ্বাসী,

এরাই পৃথিবীর আদি ও অকৃত্তিম

বস্তু ও ভাব জগতের চাষী।

 

১৬.

তুমি কি উপলব্ধি করোনি

তোমার গ্রন্থের সুর?

তাহলে সুর এবং তালকে

কেন করো অস্বীকার?

 

১৭.

কিছু বিষয় যুক্তি দিয়ে খন্ডন করা যায় না,

কিছু বিষয় ভাব দিয়ে অতিক্রম করা যায় না।

এজন্য দুটিই তোমাকে ধারণ করতে হবে,

জগতের ভারসাম্য রক্ষা পাবে তবে।

 

১৮.

আমার পাপের বোঝা আমি কাউকে দেই নি

বন্ধুর অসীম ক্ষমায় আমি শুন্যে বাস করি।

তোমাদের পাপের বোঝা আমাকে দিও

বিনিময়ে জীবনের ঝুলিতে প্রেম ভরে নিও।

 

১৯.

আমি এখানে তর্ক করতে আসিনি

এমনকি চাপিয়ে দিতেও না,

তোমাদের তর্কের ভার বহন করা

আমার কাজের অংশ না।

 

আরও পড়ুন- বদরুজ্জামান আলমগীরের কবিতা