কবিতাভাবনা- আশরাফ চঞ্চল
আগেকার যুগে কবিতা লেখা খুব একটা সহজ ছিল না। যে কেউ চাইলেই লেখতে পারত না কিংবা লেখলেও তা কবিতা হতো না। নির্দিষ্ট নিয়মকানুন মেনে ছাঁচ ছক ছন্দ ও অন্ত্যমিলের গোলকে বন্দী হয়ে লেখতে হতো। যাঁরা এসবে নিজেকে বন্দী করতে পারত তাঁরাই লিখে বাহবা কুড়াত, কবি হয়ে যেত। ফলে হাজার হাজার বছরের ইতিহাস ঘেঁটেও বিশজন কবির নাম খুঁজে পাবেন না। অবশ্য করো কারো কাছে সেকেলে সে ধারা এখনো চলমান। তাদের ধারনা ছন্দ ছাড়া কবিতা হয় না আর অন্ত্যমিল তো কবিতার শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ! উৎপ্রেক্ষা মানে রক্তসঞ্চালন আর শ্বাসপ্রশ্বাসের প্রবাহ! কিন্তু সময়ের সাথে মানুষের চিন্তাভাবনাও বদল হয়েছে। কবি কোনো কাঠামোতে আটকে থাকতে পারে না। সে লেখবে কোনো নিয়মকে তোয়াক্কা না করেই! যে লেখা মানুষের মনকে নাড়া দেয় সেটাই মূলতঃ কবিতা। সব কবি, জনগণ তা পড়ুক সে চিন্তাভাবনা নিয়ে লেখে না। সে লেখে মনের তাগিদে কিংবা প্রসবসমান যন্ত্রণায় কাতর হয়ে। সন্তান ছেলে না মেয়ে হবে সেটা না জেনেই পৃথিবীর সব মা কনসিভ করেন, কবিতাও তদ্রুপ। আমিও এরকম ভাবনা থেকেই লেখি। কেউ সেটা পড়ুক বা না পড়ুক। কেউ আমার লেখা নিয়ে ব্যঙ্গবিদ্রুপে মেতে উঠুক, সেটা আমার কাছে বিবেচ্য নয়। লেখা হচ্ছে আমার জীবনের পরম সত্তা। মত প্রকাশের প্রধান অবলম্বন।
একটা কথা না বললেই নয়, অধিকাংশ দৈনিকের সাহিত্য সম্পাদকই অহংকারী, তেলপ্রিয় নপূংশক! তেল মারলেই দাঁড়িয়ে যায়, অখাদ্য কুখাদ্যও তাদের কাছে প্রিয় খাবার হয়ে উঠে!
মূলকথা, তাদের এই কূপমন্ডুকতা নপুংসকতা এবং পরিচিতজনদের কাছে আবদ্ধ থাকার মনোভাব পরিহার করে নতুনত্ত্বে প্রবেশ করতে হবে। চারপাশের দেওয়াল ভেঙে পুরো পৃথিবীটা দেখতে হবে। মনে রাখতে হবে, সাহিত্যের ক্ষেত্রে বহুগামীরাই তেজস্বী পুরুষ!
আরও পড়ুন- জান্নাতুল মাওয়ার কবিতাভাবনা