কবি ও ছড়াকার নোমান শায়েরীর সাক্ষাৎকার
কেমন আছেন ?
– আলহামদুলিল্লাহ। ভালো আছি।
লেখালেখির শুরুটা কিভাবে?
– শুরুর কথা বলতে গেলে যেতে হবে একদম ছোটবেলায়। সপ্তম শ্রেণিতে তখন। পাঠ্যবইগুলোর মলাটে ভাঙাচোরা অন্ত্যমিল দিয়ে ছড়া কবিতার মতো করে লিখে রাখতাম চোখের সামনে যা দেখতাম তাই নিয়ে। এভাবেই শুরু লেখালেখির।
প্রকাশিত বইগুলো নিয়ে কিছু বলুন
– প্রথম বই প্রকাশ করি ২০২২ সালে “মফস্বলের প্রতিবাদী” নামে একটি ছড়া কবিতার বই। যাতে গ্রাম্য রাজনীতির নানাদিক তুলে ধরেছি। অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদ করেছি ইত্যাদি। তারপর ২০২৩ সালে “দুর্ধর্ষ বউ” নামে প্রকাশ করি আরেকটি ছড়া কবিতার বই। তাতে প্রেম, বিয়ে, দাম্পত্য জীবন, দেশ ও ধর্ম নিয়ে লেখা কিছু ছড়া কবিতা।
এখন কি লিখছেন?
– এখন গল্প লেখার চেষ্টা করছি।
আপনার লেখালেখির বিষয়বস্তু বা উপজীব্য নিয়ে বলুন।
– আমি মুলতঃ ইসলাম, সমাজের নানা অসংগতি, অন্যায়-অবিচারের প্রতিবাদ, প্রকৃতি ইত্যাদি নিয়ে লিখি।
আসন্ন বইমেলার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাই
– আসন্ন ২০২৫ বইমেলার জন্য ‘উচ্ছ্বাস প্রকাশনী’ থেকে “মুনাফিক রাজত্বে” নামের একটি গদ্য কবিতার (গদ্যিকা তথা ছোট ছোট গদ্য বললেই ভালো হয়) বই প্রকাশিত হচ্ছে ইনশাআল্লাহ। বইটির কাজ সম্ভবত সম্পূর্ণ হয়েছে।
পাঠকদের থেকে একজন লেখকের প্রত্যাশা কি থাকে? আপনার ক্ষেত্রে তার প্রভাব কি?
– পাঠকগণ লেখকের লেখা পড়বে, আলোচনা, সমালোচনা করবে, অনুপ্রেরণা, উৎসাহ, উদ্দীপনা যোগাবে এসবই তো পাঠকদের থেকে লেখকদের প্রত্যাশা।আমারও তাই।পাঠকদের ভালোবাসা, অনুপ্রেরণা, উৎসাহ, উদ্দীপনাই আমার লেখালেখিকে চালিয়ে রেখেছে।
প্রকাশকদের ব্যাপারে আপনার মন্তব্য চাই।
– পাণ্ডুলিপি পেলেই তা প্রকাশের জন্য লেখকের সাথে চুক্তিবদ্ধ না হয়ে অবশ্যই প্রকাশকদের যাচাই-বাছাই পূর্বক মান-সম্মত পাণ্ডুলিপির লেখকের সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়া উচিত। প্রতি বছর পাণ্ডুলিপি পুরস্কারের আয়োজন করা ও তা অব্যাহত রাখা।
কবি বা লেখকের কি স্বীকৃতি প্রয়োজন আছে? কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা ব্যাপারটিকে কিভাবে দেখেন?
– হ্যাঁ,অবশ্যই আছে। স্বীকৃতি না পেলে লেখালেখির মূল্য কি? যিনি যত ভালো লিখবেন তিনি তত পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়ে প্রতিষ্ঠা পাবেন। কবি তার লেখার মানে প্রতিষ্ঠা পাবেন।
লোকে বলে কবিরা ভাতে মরে- এ নিয়ে কিছু বলুন
– ঠিকই বলে। কবিকে অবশ্যই তার ভাতের জন্য অন্য কোনো ইনকাম সোর্স রাখতে হবে। আসলে কবিতার পাঠক কম। কবিতা লিখে কবির ইনকাম হয় না। আবার কবির লেখা কবিতা গানে একজন আবৃত্তি শিল্পী, গায়ক ঠিকই ইনকাম করেন। কবিতার ক্ষেত্রে বলা হলেও তারা উক্ত গানের রচনাকারের নামও বলেন না। দুঃখ জনক!
একজন লেখক কবির জন্য পড়াশোনা (সাহিত্য পাঠ) কতটুকু জরুরী?
– একজন ছাত্রের যেমন তার পাঠের পড়াশোনা জরুরি। একজন লেখক কবির জন্যও সাহিত্যপাঠ তেমনি জরুরী।
নিজের লেখালেখি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, প্রাপ্তি, প্রত্যাশা জানতে চাই।
– লেখালেখি চালিয়ে যেতে চাই। এটা আমার শখের। প্রাপ্তি বলতে প্রতিযোগিতা, পুরস্কার এসবের পেছনে দৌড়াই না; পাঠকের ভালোবাসাই প্রাপ্তি। প্রত্যাশাও এটাই।
যারা লিখতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।
– যারা লিখতে চায় লিখুক। নিজের ক্যারিয়ার, প্রয়োজনীয় ইনকামের ক্ষতি না করে। লেখালেখিকে কখনো পেশা হিসেবে নেবার ইচ্ছে করবে না। পেশা হয়ে গেলে ভালো কথা। অন্যের লেখা পড়তে হবে। সিনিয়র জুনিয়র লেখকদের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে, পরামর্শ নিতে ও দিতে হবে।
আরো পড়ুন- কবি জামিল হাদীর সাক্ষাৎকার