জহুর কবিরের কবিতাগুচ্ছ
ঝিনুকের জিহ্বা
হকচকিয়ে উঠে
রক্তজবা চোখ কচলাতে কচলাতে
কলা খির বানিয়ে ফেলেছি।
আবছায়া স্বপ্নের ঘোর
কলাবতী চোখে
উদরস্থ কামের পীযুষ নিলাজ উদোম।
ফড়িঙফাঁক চুলের লাভা
সিঁড়ির সিঁথি বেয়ে নামছে রোদ
উত্তপ্ত উনানে ঘি’য়ের বলক।
শিরশিরে পতঙ্গম নূপূর
বেহুঁশ চাতকী চার গিলে
ঝিনুকের জিহবা গোটায়।
সাহসের গাছে জল
সাহসের চারাগাছ
পরিতৃপ্তির লাজুক বদনে
চুপচাপ মুরগিকুঁজো।
লেপ্টে আছে মাতমের মাখম
মোরগ ডাকা ভোর
ভাসছে সুবাসিত আযান।
শিহরিত ভীরু দুটি পায়
সাওয়ার নূপুর বায়
প্রেমিক লাজে মরি হায়! হায়!
শ্যাম সুনিবিড় গাঢ় রাত
হারায় মদিরার উন্মত্তায়
পহেলা বেনা সঞ্জননায়।
বসন্ত
চারিপাশে কাচের দেয়াল
পাহারায় দিনরাত সৈন্যসামন্ত
তোমার জীবনে এখন তো
বন্ধু শুধুই সুখ বসন্ত।
আমি তো ঠিকই আছি বাউন্ডলে
সাদামাটা অগোছালো
অাছি আগের মতোই এখনো
হয়নি তোমার মতো বদলানো।
ঝাড়বাতিতে তোমার ঘরদোর
থাকে আলোকিত
বিত্ত বৈভব হেম পালঙ্কে
আছো পুলকিত।
অথচ কথা ছিলো জোছনায়
খড়ে ছাউয়া ছোট্ট আঙিনায়
আমি নিয়ে খুঁজবে সুখের দিগন্ত।
অমিল গীতিকাব্য
জেনেছি ও চোখে চেয়ে
তোমার মনের কথা
মুখের কথা মিছে তোমার
পুরো ষোলআনা।
কেমন করে দেবো তোমার
আমার মন জমিন
তোমার সাথে না যদি হয়
আমার মতের মিল।
দুরত্ব রয় দু’টি মনের
যদি সীমাহীন
কেমন করে ভালোবেসে
বাঁধবো বলো নীড়।
মধু চন্দ্রিমা
অভিমানী স্বপ্নের মধু চন্দ্রিমা
ব্যথার এন্তার মেঘে ঢেকেছে।
বহু দিনের সঞ্চিত কান্না
শৈলচূড়ার মতো শির তুলে
দাঁড়িয়ে আছে,সে হারা
অঙ্কুরিত মিলন মহুয়ার বোবা
কান্না পাহাড়ের বুক চিরে
উচ্ছল ঝর্ণা হয়ে বয়ে চলেছে
নূপুরধ্বনিত নদীর মতো
বিরহের অনন্ত মোহনাতে।
আলোর সহযাত্রী হয়ে
প্রচ্ছন্ন পিযুষ আলিঙ্গন আদরে
নাইবা ভরে তুললো প্রতীক্ষিত
বাসনার শুভ লগ্ন
পূর্ণিমা সজ্জিত আশার আঙিণা।
তবু হৃদয় মরুর তপ্ত বালুপথে
বরষার অন্তিম নিমন্ত্রণে
তাকে শিয়রে পাবার রক্তিম কামনা
অমরতার স্বপ্ন শিশির স্নানে বিভোর
ভোরের আশায় পথ চেয়ে রবে
আলোর পাখির মতো পেখম মেলতে।
আরো পড়ুন- জামিল হাদীর কবিতা