জাহিদ আককাজ এর কবিতাগুচ্ছ
বৃষ্টি ও অভিমানী হৃদয়
আজও গুড়িগুড়ি বৃষ্টি
প্রস্তুতি নিয়ে ছাতাসহ বের হয়নি কখনো
ছাতার সাথে আমার শত্রুতা সৃষ্টিথেকেই
কোন একদিন কবি বন্ধু বলেছিলো
ভদ্রলোকেরা ছাতা সঙ্গে রাখে
রোদ বৃষ্টি দুটোতেই বাঁচা যায়
বৃষ্টি আর ছাতা সময়ে দুটোই বন্ধুর মতো
অসময়ে চীনের প্রাচীর
তবুও কখনো আমার ভদ্রলোক হয়ে ওঠা হয়নি
আমি প্রচন্ড আড্ডাবাজ ও আবেগী প্রাণী
সময় পেলেই বন্যার পানি হয়ে উঠি।
তমাল গাছের প্রেমে পড়ি
প্রেমে পড়ি অচেনা অজানা বুনো সুন্দরীর
ভৈরব পাড়ের জারুলগাছে ফুল ফুটেছে কী
কালামেঘার দুই পাড়ে থৈথৈ করে পানি
তবুও গল্পটা থেকে যায় হৃদয়ে।
সাতদিন একটানা রোজা থাকলে নাকি
মাস কে মাস রোজা কোনো ব্যপার-ই না
শরীর মন সব নাকি সয়ে নেয়।
আজকাল প্রায়ই বৃষ্টি হয় হৃদয়ে
আমার আকাশ ভালোলাগে, ভালোলাগে বৃষ্টি
আমি বৃষ্টি হতে চায়, আহা আমি বৃষ্টি।
আর বৃষ্টিকে এড়িয়ে যায়
ছাতা
বন্ধুরা
ভদ্রলোকেরা
তবুও আমার ভদ্রলোক হয়ে ওঠা হয়নি
শুধু গল্পটা থেকে যায় হৃদয়ে।
পাপ ভ্রমণ
মৃত্যু মাঝে অদৃশ্যভাবে বেঁচে থাকে পরম
যেমন আছেন যিশু।
হুদায় ছুটে চলেছি, হয়েছি রক্তখোর গোলাপ।
অহমের ঠেলায় ভেলায় ওঠেনি সবুজাভ প্রকৃতিকুল।
এই আমি আমার আমি, আমার বা আমাদের
না হতে পারা বেদনায় নীল আকাশ হয়েছে পাংশুল।
তবু আমির পাপ ভ্রমণ করে ভূগোলের কাঁধে।
আপন ঘরে শরণার্থী
দেখ দেখ! উইপোকার মতো কুরেকুরে খাচ্ছে
আমার ঘরবাড়ি, বেঁচে থাকার স্বপ্ন।
আমার বৃহৎ মানচিত্র
যা কিনা উকুনের মতো দেখায়।
আমার বসতভিটা নাকি ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ভূমি
আহা! পবিত্র ভূমি, আহা! পবিত্র ঈশ্বর,
তোমার এ কেমন লীলা,
তোমাকেই মধ্যে রেখে চলছে রক্তখেলা।
তোমার এ ভূমিতে প্রতিদিন ঝরে হাজারো নিস্পাপ রক্তশ্বাস
তোমার এ ভূমিতে প্রতিদিন চলে দোজখের আগুনের উল্লাস
যে কুন্ডলীতে পুড়ে যায় দুধের শিশু, আমি ও আমার স্বপ্ন।
আমি বুঝিনা, এ কেমন তোমার পবিত্র ভূমি।
তুমি বলেছো “ শিশু ও আমি এক” তাহলে
তোমার ভূমিতে তুমিই পুড়ছো?
তুমি কি করে বুঝবে হে ঈশ্বর,
তোমার তো কোনো সমকক্ষ বা পরিবার রাখো নাই।
আহা! তোমার মৃত্যু ও নাই।
তুমি কি করে বুঝবে এ যন্ত্রণা, হে এতিম ঈশ্বর।
তোমার এ ভেলকিবাজির চরকায়
আজ আমি আপন ঘরে শরানার্থী।
প্রকৃত সারস ও বিনয়
শিকারি দূর থেকেই গুলি করলো বুক বরাবর
মাটিতে লুটিয়ে পড়লো সারস।
উল্লাসী শিকারি বলল দেখে যা বিনয়
প্রকৃত সারস মাটিতেই লুটিয়ে আছে।
খুন করেছে চাঁদের আলো
এক জনমে পুষে পেলে
হয়কি প্রেমের শেষ,
প্রেমের পাখি দিলে ফাঁকি
কাঁটে না তার রেশ ।।
যন্তে রাখা সোনার নুপুর দিলাম পাখির পায়
পাখি আমার মনটা লয়ে কোনখানে লুকায় ।।
মন আকাশে ভেসে বেড়ায় তোমার ভুষাবেশ,
প্রেমের পাখি দিলে ফাঁকি কাঁটে না তার রেশ।।
মনের পাখি রাত-দুপুরে ডাকাডাকি করে
কিসের খোঁজে হাতড়ে বেড়ায় কেঁদে কেঁদে মরে।।
খুন করেছে চাঁদের আলো পাখির বেলা শেষ,
প্রেমের পাখি দিলে ফাঁকি কাঁটে না তার রেশ।
আরো পড়ুন- শিশির আজমের কবিতা