বুকোস্কির একগুচ্ছ কবিতা
সৃজন তত্ত্ব
চার্লস বুকোস্কির কবিতা “ইয়েস ইয়েস” অবলম্বনে
যখন ঈশ্বর প্রেম সৃষ্টি করলেন, তিনি সহযোগিতা করেননি
যখন ঈশ্বর কুকুর সৃষ্টি করলেন, কুকুরের কোন লাভ হয়নি
যখন ঈশ্বর বৃক্ষরাজি সৃষ্টি করলেন তিনি ছিলেন গড় মানের
যখন ঈশ্বর ঘৃণা সৃষ্টি করলেন আমরা সুবিধার মানদণ্ড পেলাম
যখন ঈশ্বর আমাকে সৃষ্টি করলেন তিনি আমাকে সৃষ্টি করলেন
যখন ঈশ্বর বানর সৃষ্টি করলেন তিনি ঘুমিয়ে ছিলেন
যখন তিনি জিরাফ সৃষ্টি করলেন তিনি নেশাগ্রস্ত ছিলেন
যখন তিনি মাদক সৃষ্টি করলেন তখন তিনি উচ্চমার্গীয় ছিলেন
যখন তিনি আত্ম হনন সৃষ্টি করলেন তিনি নিম্ন স্তরে ছিলেন
যখন তিনি তোমাকে সৃষ্টি করলেন, বিছানায় শোয়া
তিনি জানতেন তিনি কি করছেন।
তিনি ছিলেন নেশাগ্রস্ত এবং তিনি ছিলেন উচ্চমার্গীয়
এবং তিনি সৃষ্টি করলেন পর্বত এবং সমুদ্র
এবং আগুন একই সময়ে।
তিনি কিছু ভুল করেছেন
কিন্তু যখন তিনি তোমাকে সৃষ্টি করলেন
বিছানায় শোয়া
তিনি তাঁর আশীর্বাদপূর্ণ মহাবিশ্ব জুড়ে এসেছিলেন।
ধারের কলম
চার্লস বুকোস্কির এইট কাউন্ট অবলম্বনে
বিছানায় বসে বাইরে দেখছি
বিজলির তারে তিনটে পাখি।
একটি পাখি উড়ে চলে গেল
তারপর আরেকটি উড়ে গেল
রইলো বাকি একটি,
সেটিও উড়ে চলে গেছে।
আমার খাতার পাতা এখনো সাদা
আমি পাখি দেখায় আটকে আছি।
ভাবলাম তোমাকে জানানো দরকার
কলমের কালি খরচ হয়নি একটুও।
আমি প্রেমে পড়েছি
I’m in Love by Charles Bukowski
ও তো কচি মেয়ে, সে বললো
কিন্তু আমার দিকে তাকাও
আমার গোড়ালি সুন্দর
আমার কব্জির দিকে তাকাও
আমার কব্জি সুন্দর
হায় খোদা!
ভেবেছিলাম ঠিক পথেই এগুচ্ছি
কিন্তু এখন সব তার দিকেই যাচ্ছে!
প্রতিবার যখন সে ফোন করে উন্মত্ত হয়ে যাও
তুমি বলেছিলে এটি আর চলছে না
তুমি আমাকে বলেছিলে এটি শেষ হয়ে গিয়েছে
শোন,ভালো নারী হবার জন্য অনেক সয়েছি
তোমার খারাপ মেয়ে দরকার কেন?
তুমি নির্যাতিত হতে চাও, তাই না?
কেউ হস্তক্ষেপ করলে মনে কর জীবন পচে গেছে
পচা জীবনে তো সবই চলে, তাই না?
বল তাই কি না? তুমি কি চাও তোমাকে ভাগাড়ের
শকুনের মতো দেখা হোক? আর আমার ছেলে,
আমার ছেলে আমার সাথে দেখা করবে বলছিল
আমি আমার ছেলেকে বলেছি
আমার সব প্রেমিককে ত্যাগ করেছি
একটি ক্যাফেতে দাঁড়িয়ে ছিলাম আর
চিৎকার করে বলেছি –
আমি প্রেমে পড়েছি।
কিন্তু তুমি আমাকে বোকা বানালে?…
আমি দুঃখিত, আমি বললাম আমি সত্যি দুঃখিত।
“আমাকে ধরো, আমাকে একটু ধরবে প্লিজ!”
আমি কখনো এ অবস্থায় পড়িনি আগে-
আমি বললাম। এই ত্রিভুজ উপাখ্যান…
সে উঠে দাঁড়িয়ে একটা সিগারেট ধরালো
থরথর করছিল তার পুরো শরীর। দ্রুত সব
গুছিয়ে নিয়ে বন্য আর উন্মত্ত ভাবে নেমে গেল।
তার দেহ ছিল ছোট, সরু বাহু, খুব সরু।
সে আর্তনাদ করে আমাকে মারতে শুরু করলো
আমি তার কব্জি ধরলাম, চোখের মাঝে দেখলাম
ঘৃণা, শতাব্দীর পুরোনো আর জ্বলজ্বলে সত্য।
আমি ভুল ছিলাম, গুণহীন আর অসুস্থ
যা কিছু শিখেছিলাম নষ্ট হয়ে গেছে
কোন জীবন্ত প্রাণী আমার মত বিরক্তিকর নয়
এবং আমার সমস্ত কবিতাগুলো ছিল মিথ্যা।
আরো পড়ুন- জামিল হাদীর কবিতা