পদাবলিপ্রচ্ছদ

নজর উল ইসলাম এর কবিতা

ফুল পড়তে পারিনি

ফুল পড়তে পারিনি দেখিনি নদীর গোলক-মন

আগুন সততা পূরক গমন জীবন

কুশীলব জীবন পারে পোড়াচোখ, মঞ্চস্থ নাটকে নাটক

আস্ত রক্তনদী তোর-ই ভাইবোন,তোর-ই আকাশ পাখি

মোহচাঁদ আসে ভিখারি আজন্ম পৃথিবীময়

কোথায় আমার আমি ছড়াই আপন শিশির-গান

একটা ভোর একটা নিশি একটাই সূর্য স্বাক্ষর

বিমূর্ত আহ্লাদ করি,ভাঙি ভাঙনের মুখস্বর

আমার ভেতর সাগর জোড়া জড়িয়ে আছে নদীর শেকড়

হাসতে পারি ফুলের মতো একচাদরে উজাড় ঘোর

দুপুর দুপুর খেলছে যারা মগ্নশিরার শরীর

বিশ্বমনের মায়াকাঁটায় বিকল অতল গভীর

রাত্রি-জড়া কালোপাখি মনুষ্যত্বের নিচে,ততই রক্ত আসে–

বুকের থেকে মনের থেকে জাহান্নামের আঁচে…

 

 

নেশা

আতসবাজি ছুঁড়ে দিলে অতিভাষণের মুখ

ভূগোল ঠুকরে পেশি আর চতুরতায়

পার্বতী মেঘ দেখেছে যা চুপিচুপি

কেউ কেউ ধূসরেও তীব্র শালুক

 

আজও সহনশীল চাষীর বুক

মরেও পায়রা ওড়ায় বিপন্ন মন-পাড়ায়

চাকা ঘোরে বিশ্বশ্রী চরণচিহ্ন জীবাশ্মসার

 

আঁটি ভাঙে ছন্দের জনযোজনা,সব চেতনা-পাখি

আসে না কেবল মন-মজদুরি, নিরুদ্দেশের জীবন পালক

চড়া মেঘ চড়া হয়, রোদ্দুর তাতায় বড়,ভাসা পানা —

সরবতি জলে শুধু মিশে থাকি অঘোর নেশায়…

 

 

পর্ণমোচী

রেখেছ ঘামবর্ণে আকীর্ণ কাঁকরে কে জানে খুঁজে নিতে হবে

অনন্তজোড়া দহনবেলা আবাদি আঁচমন

পাথরে মুখ লুকনো গভীর বিদীর্ণ সেই আকাশ

আলোগাছে উপোসী একা অচিন পাখি

 

উপমা অধরা চাঁদমন, ভিখিরি সুতোয় স্বপ্নপরি

কে বোঝে জলের আদব-কায়দা, জলের-ই শরীর ছুঁয়ে

ভাস্করী স্বাক্ষরিত ঢেউ পোড়া উঠোনে দেখা

বিপুল মেঘে মেঘে ছাওয়া তোমার অমোঘ ঘর

 

কেউ বলে নাচের নদী, গাঙভাসা আমি দুঃখিপানি–

মজে যাওয়া সংকটে আকাঠ কাঠঠোকরা মরি বিষাদে

জলঢোঁড়ার পাপ নির্বিষ সজীব

কেড়েছে অহংকারী ঠোঁট পাতার পর পাতা…

 

 

ফুলের পিছনে ফুল

জাদুলেখন কৌশল নির্ভর প্রজ্ঞার আগুন

তুচ্ছ সে বলাকা মেঘ থেকে উড়ে আসে ঠিকানায়

কে কবে ভালবেসে শুনিয়েছিল ফুলমন

অবিকল আড়াল খেলায় স্পর্শ-বিভোর

সে তো শুদ্ধতায় সুলগ্ন সুর-ভাষ্য

উৎস বন্দিত চাদরে শিউলি ভরা সকাল

ফিরেছে পুষ্ট নদী অতল খেলায়

দাঁড়কাকগুলো এদিক-ওদিক মনঘর খোঁজে

আচরণ বুঝে পাখি আমার রূপকথায় ডুবে আছে

কৌতুক এমন-ই প্রাণান্ত বকুল ফুল উদ্বেলিত

ফুলের পিছনে ফুল টান-দোলাচলে গৌরবজনক…

 

 

মর্মভেদী অক্ষরের হাহাকার

এখনও জীবন ভেজেনি হিংস্রতার

প্রেমিক চাঁদ তো ফুটে আছে আলগা বাঁধনে—

বাজপাখিদের কত খিদে ? আড়াআড়ি শূন্যতা দেগে

কতটা নিষ্ঠুর হলে শিশুদের মাথা থেকে ছাদ ওড়ানো যায়

কতটা ঐতিহ্যহীন ডুবলে মানুষ মানুষ থাকে না

সব বাতিঘর কেড়ে ভাবছো প্রত্যাশাপুরণের নিশ্চিন্তপুর

বিরামহীন দাপাদাপি স্রষ্টার মাটির ওপর অমানবিক উদভ্রান্ত

শেষাবধি আলো তোমার খুঁজতে হবে—মিশ্রবৃত্তের আলো

উপলব্ধি ও বিনিময়ধর্মী বহুস্বরের ক্যালিগ্রাফি যা কেবল

মানুষ কেন পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীর বৃহত্তর পরিসর

উদাহরণ টানা উৎসমুখ খুঁজি,গ্রহণে-বিনির্মাণে

পুঁথিনির্ভরতার আগুন প্রমান করে বেবাক-তির্যক

নিভে আসে সব চেতনার দিনাতিপাত —সেতুবন্ধন

ইশারার পাখি উড়তে থাকে কবিতার নতুন দিগন্তে

দুই মলাট ভাগ হয়ে যায় সাজানো চেহারায়…

 

ফেসবুকে আমাদের ফলো করুন- পরমপাঠ সাহিত্য পত্রিকা

আরো পড়ুন- রুশিয়া জামান রত্নার কবিতা