পদাবলিপ্রচ্ছদ

বিজয় দিবসের কবিতা

বাংলাদেশ

জান্নাতুল মাওয়া

বাংলাদেশ, তুমি ইতিহাসের দীপ্তআলো,

পেরিয়ে এসেছো আছে যত নিপীড়নের আঁধার-কালো।

পদ্মা, মেঘনা, যমুনার ঢেউ,

তোমার বুকে ছাড়া এমন আর কোথাও দেখেনি কেউ!

 

তোমার ইতিহাস জুড়ে আছে অম্লান

পাল-সেন, সুলতানী যুগের রূপ-ছাপ উদ্যান।

মুঘল স্থাপত্য, ব্রিটিশ-পাক শোষণ,

সব কিছু মুছে তুমি পেয়েছো নতুন এক ভূষণ।

 

সংস্কৃতিতে তুমি অপরূপ, তুমি বৈচিত্র্যের ধারা,

নৃত্য, গান, চিত্রকলায় তোমার সুরধারা।

রবীন্দ্রের সংগীত আর নজরুলের গান,

জীবননান্দের বনলতা যেন বাংলা কবিতার প্রাণ!

 

তুমি এক অস্প্রদায়িক চেতনার মঞ্চ,

ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তোমার প্রাচীন কাঞ্চ।

মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান,

তোমার বুকে মিলে এক মানবের সার্থক গান।

 

তোমার প্রকৃতি যেন এক স্বর্গীয় ভাস্কর্য,

সবুজের গালিচায় মাখানো রূপের কারুকার্য।

চা-বাগানের সৌরভে পাহাড়ের কোল,

তোমার স্রোতে ভাসে জীবন, শস্যের দোল।

 

তুমি জনপদের প্রাণ, তুমি গ্রাম-বাংলার কথা,

তোমার শহরে জেগে ওঠে প্রযুক্তির ব্যস্ততা।

চাকমা,মারমা,সাঁওতাল, গারো, যত আছে জাত পাথা

সবাই মিলে গড়েছে তোমার দুঃখ-সুখের গাঁথা

 

বাংলাদেশ, তুমি স্বাধীনতার অক্ষত নকশা,

বীর শহীদের রক্তে লেখা চিরমুক্তির ভাষা।

তুমি ইতিহাসের রক্তগর্ব, তুমি জাতির দিশা,

তোমার ছায়ায় বাঁচুক বাঙালির চিরন্তন ভালোবাসা।

 

বিজয় দিবস
রেজাউল করিম রোমেল

১৬ই ডিসেম্বর বিজয় দিবস
তোমরা সবাই জানো,
না জানলে সবাই মিলে
আমার কথা শোনো।

নয় মাস যুদ্ধ করে
দেশটা করেছি জয়,
শত অন্যায় অপরাধ
করিনা কভু ভয়।

আমরা হলাম বীরের জাতি
দেশটা গড়তে চাই,
বাঁধা বিপত্তি পেছনে ফেলে
এগিয়ে যাব সবাই।

 

 

 

বাঙালির বিজয় 

ইমরান খান রাজ 

 

লাল-সবুজের একটি পতাকার জন্য

নিজের পরোয়া না করে

জীবন দিলো লাখো বাঙালি।

মাতৃভূমি, মা-বোনের সম্মান রক্ষায়

বুক উঁচু করে এগিয়ে গেলো

ঘাতকের বুলেট লুফে নিতে।

ডর-ভয়, লাজ-লজ্জা, কিংবা

ছিলনা কোন পিছুটান ও হারানোর কষ্ট

শুধু ছিল দেশের জন্য অপরিসীম ভালোবাসা।

দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও প্রতিহিংসার পরে

পূব আকাশে দেখা দিলো এক সুদৃঢ় আলো

যেই আলো ফিরিয়ে দিলো বাঙালির বিজয়।

 

বিজয় নিশান
সজীব হুমায়ূন

লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়
একটি পতাকায় নিজেদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া।
জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বিজয়
বিশ্ব-দরবারে মাথা উচু করে লাল সবুজের জানান দেওয়া
হারতে শিখিনি, জিততে এসেছি অস্তিত্বের প্রশ্নে।
লাল সবুজের বিজয়ের নিশান উড়াতে এসেছি
দেশ মাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করে।
বহুমূল্য চুকিয়ে পাওয়া এ আমার বিজয়
রক্তস্রোতে ভেসেছ দীর্ঘ নয় মাস।
ধর্ষিতার আর্তনাদে আজও বাতাসে লাশের গন্ধ পাই
একটি বিজয় একটি পতাকা একটি জাতি
সর্বস্ব হারিয়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে বুক চিতিয়ে
বিজয় ছিনিয়ে এনেছে জননীর জন্য।
জাতি পেল লাল সবুজের বিজয় নিশান
দেশ মা পেল মুক্তির স্বাদ।।

 

আরো পড়ুন- হেমন্তের পদাবলি