মণীন্দ্র গুপ্তর কবিতায় কাহিনির ব্যবহার- অংশুমান কর- প্রবন্ধ
এইরকম একটা ধারণা অনেকে পোষণ করেন যে, কবিতায় কাহিনির ব্যবহার কবিতার ক্ষতি করে। পাঠক হিসেবে আমার তা কখনওই মনে হয়নি। কেবল রবীন্দ্রনাথের কবিতা পড়েই আমার এই বিশ্বাস জন্মায়নি, জন্মেছে মণীন্দ্র গুপ্তর কবিতা পড়েও। কবিতায় মণীন্দ্র গুপ্ত কাহিনির ব্যবহার করেছেন দু-রকমভাবে। কখনও কবিতার ভেতরে টুকরো টুকরো গল্প গুঁজে দিয়েছেন। কখনও আবার একটি কাহিনিই হয়ে উঠেছে একটি কবিতা। কবিতায় টুকরো কাহিনির ব্যবহার অনেকে মেনে নিতে পারলেও, একটি কবিতা যখন সম্পূর্ণই একটি কাহিনির ওপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে, তখন সেই কবিতাকে অনেকেই কবিতা বলে মানতেই চান না। সব সময় তাঁরা যে ভুল বলেন তাও না। মণীন্দ্র গুপ্তর কবিতা পড়লে অবশ্য বোঝা যায় যে, একটি কবিতা সম্পূর্ণতই একটি কাহিনির ওপর নির্ভর করে নির্মিত হতে পারে।
কাহিনির ব্যবহার যে কবিতার ক্ষতি করে না এই সত্যকে প্রতিষ্ঠা করতে যেক্ষেত্রে একটি সম্পূর্ণ কাহিনিই একটি কবিতা হয়ে উঠেছে, মণীন্দ্র গুপ্তর এইরকম দু-টি কবিতার উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ‘অভিশপ্ত’ কবিতাটির কথাই ধরা যাক। কবিতাটি এইরকম:
“এক প্রাচীন কিংবদন্তি আকাশপথে সিঁদুরে মেঘের মতো ভেসে যেতে যেতে
প্রেতাত্মার মতো এসে আমাকে ধরেছে:
একদিন রাত্রে বউয়ের আবদার রাখতে গিয়ে নদের চাঁদ
কামাখ্যার মন্ত্র পড়ে কুমির হয়ে গিয়েছিল — তারপর একা-বাড়িতে
বিভীষিকা দেখে বউয়ের কী চিৎকার! আর তার পায়ের কাছে
নদের চাঁদের হুটোপাটি।
রাতের দমকা বাতাস তার লোহাগাছের গুঁড়ির মতো শরীরে ঢুকে
ঝাপট মেরে মেরে মনুষ্যসংস্কার মুছে দিল।
সিঁদুর কৌটোর ঢাকনার মতো তার ডগডগে লাল চোখে
সুখে থাকো লেখাটি ডুবে ডুবে যায় —
মানুষজন ওঠার আগে, শেষ রাত্রে, মেঘনার জলে হুড়মুড় করে নেমে গেল সে।
এখন মেঘনার বুক চেরা কালো জলে তার সতেরো ফুট দেহ
শয়তানের মতো গোপন ও উদ্ভাসিত।
নদীর দুই তীরের ঘাটগুলো থেকে অনেক ভাবময়ী
উদাসনয়নাকে
নিয়ে গেছে সে।
দুই চোয়ালের মধ্যে অপ্সরার সরু কোমর ছটফট করে —
এই জলকেলির কি কোনো তুলনা আছ!
শুধু কামাখ্যার বরে জীবন কত ভয়ংকর ভাবে পালটে যায় আমাদের”।
একটি লোককথাকে এই কবিতায় বর্ণনা করেন মণীন্দ্র গুপ্ত, শান্ত, নীচু স্বরে। “ময়মনসিংহ গীতিকা”র একটি বিয়োগান্ত পালা ‘মহুয়া’র চরিত্র নদের চাঁদ। সেই নামটিই মণীন্দ্র গুপ্ত বেছে নেন এই কবিতার কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম হিসেবে। যদিও “ময়মনসিংহ গীতিকা”র নদের চাঁদের সঙ্গে এই কবিতার নদের চাঁদের কোনোই মিল নেই, জীবনের বিয়োগান্তক পরিণতিটুকু ছাড়া। এই কবিতার নদের চাঁদ স্ত্রীর আবদার রাখতে গিয়ে কামাখ্যার উপাসনা করে। ফলে মনুষ্যজীবন পরিত্যাগ করে হয়ে যায় একটি কুমির, নেমে যায় মেঘনার জলে। কুমির নদের চাঁদ এরপর একের পর এক উদাসী নারীকে শিকার করে। তার দুই চোয়ালের মধ্যে ছটফট করে নারী শরীরের কটিদেশ। লক্ষণীয় যে, এই নৃশংস হত্যার দৃশ্যগুলিকে মণীন্দ্র গুপ্ত তুলনা করেন জলকেলির সঙ্গে।
প্রশ্ন উঠতে পারে যে, এই কাহিনিটি কবিতা হয়ে উঠল কী করে? কেবল হত্যাদৃশ্যকে কবি জলকেলির সঙ্গে তুলনা করলেন বলে? অবশ্যই না। এই কবিতাটি বাস্তব এবং অবাস্তবের মধ্যে চলাচল করতে থাকে। লোহাগাছের গুঁড়ির মতো পুরুষ শরীরের ভেতরে ঢুকে যাওয়া রাতের দমকা বাতাস, মেঘনার বুক চেরা কালো জল, অপ্সরার সরু কোমর — এইসব চিত্রকল্পের ব্যবহারে এমন একটি আবহও এই কবিতায় মণীন্দ্র গুপ্ত নির্মাণ করেন, যে-আবহটিই একটি কাহিনিকে নেহাতই কাহিনি আর রাখে না, উত্তীর্ণ করে নেয় কবিতার স্তরে। কুমির রূপী নদের চাঁদ কেবলমাত্র উদাসী অপ্সরাদেরই তার শিকার বানায় — নারী পুরুষের সম্পর্কের অন্যতম অক্ষ যৌনতাকেও এই তথ্যের ব্যবহারে ইশারাতে ছুঁয়ে দেন কবি।
যৌনতার প্রসঙ্গ যখন চলেই এল, তখন যৌনতাকে একেবারে ভিন্নভাবে যে-কাহিনি-কবিতায় ব্যবহার করেছেন মণীন্দ্র গুপ্ত, সেই কবিতাটিকে পাঠকের সামনে পেশ করতে ইচ্ছে হচ্ছে। কবিতাটির নাম ‘দু নম্বর’। কবিতাটি শুরু হয় এইভাবে:
“আমার স্ত্রী আজকাল আলাদা আলাদা সময় রাখছে।
তার দুটো ডায়েরি, দুটো আপয়েন্টমেন্ট খাতা।
কিছু ধরার ছোঁয়ার উপায় নেই।
ইদানীং আবার বেরোবার সময় সে
তার এক বান্ধবীকে আমার কাছে গচ্ছিত রেখে যায়।
এসব হল বঞ্চিত না করার সাধু চেষ্টা, না কি আরও কুটিল কোনো অভিসন্ধি!”
কবিতার সূচনাটিই পাঠককে অনুসন্ধিৎসু করে তোলে কবি-কথক পত্নীর জীবনযাপনকে কেন্দ্র করে। দু-টি অ্যাপোয়েন্টমেন্ট খাতা নিয়ে তিনি ঠিক কী করেন সেটি স্পষ্ট করে বোঝা যায় না; তবে সন্দেহ জাগে যে, তিনি বোধহয় অন্য একটি সম্পর্কে জড়িয়েছেন, এবং তাঁর সঙ্গলাভ থেকে কবি-কথক বঞ্চিত হচ্ছেন বলেই খানিকটা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঢঙেই তাঁর অনুপস্থিতিতে গৃহে রেখে যাচ্ছেন তাঁর বান্ধবীকে।
কবিতাটিতে এরপর পাওয়া যায় একটি দিনের বর্ণনা। এই দিনটিতে কবি-কথককে তাঁর স্ত্রী জানান যে, তিনি একটু বাইরে বেরোচ্ছেন এবং তাঁর বান্ধবী অনসূয়া যথারীতি এসেছেন তাঁদের গৃহে। এই সংবাদটি প্রথমে নিষ্পৃহভাবে গ্রহণ করলেও তাঁর স্ত্রীর পায়ের শব্দে (“বিলীয়মান ঘটকের পায়ের শব্দে” – লিখেছেন মণীন্দ্র গুপ্ত) তিনি কৌতূহলী হয়ে দোতলা থেকেই উঁকি মেরে দেখেন কোন সাজে সেজে গৃহের বাইরে যাচ্ছেন তাঁর স্ত্রী। তৃতীয় স্তবকে কবিতাটি অনসূয়ার বর্ণনা দেয়:
“অনসূয়া বেশ রোগা, কিশোর ছেলের মতো চেহারা।
খাবার টেবিলে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, তার সইয়ের মতলবটা সে বুঝতে পারছে কি না।
অনসূয়া অনুভূতিময় হাসল: সে বুঝেছে।
মতলবের ত্রিধারা এই বাড়িতে একটা কিছু পাকাবার অপেক্ষায় আছে।
বলল কিন্তু কিছু করার আগে আমার জানা দরকার
তার ডাবল মাস্টেকটমি হয়েছে।
শব্দটা আমি এর আগে শুনিনি দেখে আরও স্পষ্ট করল:
‘অর্থাৎ আমি দুটো স্তনই হারিয়েছি’। তারপর
সে আবিষ্ট আর আমি স্তম্ভিত হয়ে বসে রইলাম”।
কবিতাটি এতদূর পর্যন্ত পড়ে পাঠকও স্তম্ভিত হন। একটি ত্রিকোণ বা চতুর্কোণ প্রেমের কাহিনির জন্য অপেক্ষা করে এক ভয়ংকর ধাক্কা খান। কবিতাটি এরপর অতিনাটকীয় হয়ে উঠতেই পারত। হতেই পারত স্তন হারানো এক নারীর জন্য কুম্ভীরাশ্রুতে পূর্ণ। কবিতার নামে অনেকেই এমন কিছুই লিখে থাকেন। কিন্তু মণীন্দ্র গুপ্ত সেই পথে হাঁটলেন না। লিখলেন:
“ক্রমশ একটু একটু করে ভাবতে লাগলাম: দুটি পূর্ণ স্তন থাকলে
ওকে কেমন দেখাত। শুধু যদি একটি থাকত! – ভাবতে চেষ্টা করলাম
সেই অর্ধনারীশ্বরের নগ্ন বুক। আর এখন যে
দুটি স্তনই নেই – তাতে কার ক্ষতি, ওর না আমার?
আমি নানাভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ভাবতে লাগলাম”।
পাঠকের ঠুনকো আবেগকে উসকে দেওয়ার পরিবর্তে কবিতাটি তাঁর মস্তিষ্কে ধাক্কা দিতে থাকে। যৌনতা বিষয়ক একটি বুদ্ধিদীপ্ত সন্দর্ভের (ইন্টেলেকচুয়াল ডিসকোর্সের) জন্ম দিতে থাকে, কবিতার মাহাত্ম্য কণামাত্র ক্ষুণ্ণ না করেই। অধিকাংশ পুরুষের চোখে নারী যে শেষ পর্যন্ত শরীর – বিদ্রুপ করতে থাকে এই ধারণাটিকেও। নারী শরীরকে কেবলই পণ্য হিসেবে দেখতে চাওয়া পুরুষতন্ত্রকে তীক্ষ্ণ আক্রমণ করে লেখা আর একটি কবিতার কথা এই প্রসঙ্গে মনে পড়ছে। কবিতাটির নাম ‘ম্যাডোনার ভারত দর্শন’। কবি সুবোধ সরকার। এই কবিতাটিতেও একটি কাহিনি আছে। কবিতাটির শিরোনামেই কাহিনিটি ধরা আছে। ম্যাডোনার ভারতবর্ষে আসার গল্প বলে এই কবিতা। কবিতাটির একটি অংশে সুবোধ সরকার লিখেছেন:
“সেই নারী এক এক করে পোশাক খুলে বলল, তাকাও ভারতবাসী
এই আমার জঙ্ঘা
এই আমার নাভি
এই আমার স্তন
এত সুন্দর স্তন তোমরা কি আগে কখনও দেখেছ?
তাকাও ভারতবাসী
আমি দু’পা ফাঁক করে দাঁড়ালাম
এইখানে আমার হীরে
হীরে ঢেকে রাখা আধখাওয়া একটা আপেল
কয়েক সহস্র মানুষের দাঁত বসেছে এখানে
তবু পুরোটা আপেল কেউ খেতে পারেনি এখনও”।
বোঝাই যায় যে, এই কবিতাটি যৌনতার ধারণাটির সঙ্গে একটি বুদ্ধিগত বোঝাপড়ায় যুক্ত হওয়ার পরিবর্তে যৌনতাকে খানিকটি উত্তেজক করে পেশ করছে। এটি দোষের নয়। কিন্তু যৌনতার এহেন পরিবেশন কবিতাটির কাঙ্ক্ষিত লক্ষে পৌঁছতে পারার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।
মণীন্দ্র গুপ্ত ‘দু নম্বর’ কবিতাটি শেষ করেন এইভাবে:
“অনেকক্ষণ পরে এর একটা অন্য দিক আমার মাথায় এল।
জিজ্ঞেস করলাম: ‘অনসূয়া তোমার এই শরীরের কথা কি তোমার বন্ধু জানে?’
‘না’।
‘জানিয়ো না। এসো, একথা আমাদের মধ্যেই গোপন থাক’।
অনসূয়া নড়ল না। যেন নিজের মনে বিড়বিড় করল কিছু।
তার খোলা চোখে পাখির ঘুম-চোখের-পর্দার মতো ধূসর যবনিকা নামল”।
নীচু স্বরে শেষ হওয়া এই কবিতাটি পাঠককে ফিরিয়ে নিয়ে যায় শিরোনামটিতে। বোঝা যায় যে, একাধিক অর্থে ‘দু নম্বর’ এই শিরোনামটিকে ব্যবহার করেছেন কবি। বোঝা যায় যে, কিছু মিথ্যে অনিবার্য, জীবন নির্বাহের জন্য কিছু মিথ্যেকে লালন করাও জরুরি। এইরকম একটি মিথ্যেকে লালন করার মূল্যটিও যে অনসূয়ার কাছে অসীম কবিতাটি সেই সত্যকেও প্রতিষ্ঠা করে শেষ পঙ্ক্তিটির মাধ্যমে। এভাবে দার্শনিক অনুভব আর রহস্যময়তা – এই দুইয়ের সঠিক মিশ্রণ একটি কাহিনিকে অন্তিমে কবিতায় উত্তীর্ণ করে দেয়। কাহিনির এই পরিসমাপ্তি নাটকীয়, কিন্তু অতিনাটকীয় নয় একেবারেই। শিল্প মাধ্যম হিসেবে কবিতা নাটকীয়তাকে প্রশ্রয় দিলেও, অতিনাটকীয়তাকে গ্রহণ করে না। এই সত্য মণীন্দ্র গুপ্তর জানা, যেমন জানা ছিল রবীন্দ্রনাথের। স্মরণ করা যেতে পারে ‘দেবতার গ্রাস’ নামক কাহিনিকবিতার পরিসমাপ্তিটুকু। সেখানে মায়ের বলে ফেলা একটি মুখের কথাকে স্থির সত্য ধরে নিয়ে উত্তাল জলতরঙ্গের মধ্যে ছুড়ে ফেলা হয় একটি শিশুকে। এই অতিনাটকীয় ঘটনাটিকে কবিতার মধ্যে আঁটিয়ে নেওয়ার জন্য রবীন্দ্রনাথ একটি অনবদ্য পঙ্ক্তি রচনা করেন কবিতার শেষ চরণ হিসেবে। রাখাল জলের মধ্যে তলিয়ে গেল এই দৃশ্যের বর্ণনা দেওয়ার পর লেখেন: “সূর্য গেল অস্তাচলে”। এই আন্ডারটোনের বাকপ্রতিমাই অতিনাটকীয়তাকে কবিতা করে তোলে।
এই দু-টি পরিসমাপ্তির পাশে যদি রাখা যায় ‘ম্যাডোনার ভারতবর্ষ’র পরিসমাপ্তিকে, তাহলে বোঝা যায় অতিনাটকীয়তা কাহিনি কবিতার ক্ষেত্রে কতখানি বিপদজনক হতে পারে। সুবোধ সরকারের কবিতাটি শেষ হয় এইভাবে:
“হে গরিব শিক্ষিত ভারতবাসী তাকাও
তোমরা আমার ছবি ছাপাও এত, কেন ছাপাও?
এসো আমাকে ধরে দেখো, স্পর্শ করে দেখো
তোমরা ওভাবে দূরে দাঁড়িয়ে কেন?
তোমরা কি এবার কেরোসিন ঢেলে দেবে আমার গায়ে?
পুড়ুক, পুড়ে যাক আমার শ্রোণীদেশ
আমার বুক, আমার পিঠ, মাথার চুল
কিন্তু আমার দু-পায়ের ফাঁকে
আধখাওয়া আপেল কখনও আগুনে পোড়েনি
তোমরাও পারবে না একে বিনাশ করতে।
ধন্যবাদ ভারতবর্ষ, ধন্যবাদ বোম্বাই কলকাতা, ধন্যবাদ
ঐ পথের শিশুটিকে
যে আমার প্রকৃত শরীর দেখে ভয়ে কেঁদে উঠেছিল”।
অতিনাটকীয়তায় ভর করে কাঁচা আবেগকে উসকে দেওয়ার ফলে এভাবেই সম্ভবনাময় একটি কবিতার করুণ মৃত্যু ঘটে। যেখানে এই পথে সুবোধ সরকার হাঁটেননি, সেখানেই তাঁর কবিতাকে শুভ দাশগুপ্তর কবিতা নামক জঞ্জালের থেকে আলাদা হয়ে ওঠে। এই পথটিতে মণীন্দ্র গুপ্ত অবশ্য কখনোই হাঁটেননি। তাঁর কবিতার খাতায় জঞ্জালের সামান্যতম উপস্থিতিও তিনি বরদাস্ত করেননি কখনও।
*অংশুমান কর– কবি; অধ্যাপক, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, ভারত।