শারদীয় পদাবলি
দেখা হবে
গৌতম ঘোষ-দস্তিদার
একদম পুরোপুরি নিশ্চিত থেকো –
আবার আমাদের দেখা হবে, ঠিক দেখা হবে –
দেখা হবে প্রতিবাদী চাঁদ বাড়ি ফিরে এলে
দেখা হবে আবাদি রাত ঘুমে কাতর হলে
দেখা হবে বরবাদি বর্বরেরা যুদ্ধ হেরে গেলে
দেখা হবে রুক্ষ রোদের দল পথ হারালে
দেখা হবে জ্যোৎস্নারা পথে নেমে রাতের দখল নিলে
এক মানবীর তরে এক মানবের ভালবাসা ফিরে এলে
নষ্ট চড়াতেও কোনো প্রজন্ম তার ঠিকানা খুঁজে পেলে
দেখা হবে, ঠিক জেনো –
দেখা হবে সে রাত গড়িয়ে সকাল হলে…
অসুর পীড়নে অম্বিকা
সুশান্ত হালদার
সোনালীকে বলেছিলাম
ঢেকে রাখ বুক,
ছোঁ মারা চিল জানে
কতটা দুর্বল মা মুরগীর ডানা
মেঘে মেঘে কেটে গেল বেলা
আমি কি জানতাম
লাজুক নয়নে এঁকেছে ত্রিশূল অসুর পীড়নে অম্বিকা?
এই যে সুর বেসুরো হলো
তা কি জানে
পাথর বুকে সাঁতার কাটা সুবলং ঝর্ণা?
হাতে আমার ভর করেছে মহাশূন্যের আলপনা
বার্জার রঙে এখন আর আমি
দেবী ঢঙে সোনালীর ছবি আঁকি না!
শরৎ আসে আসেনা সে
শাহাব উদ্দিন ভূঁইয়া
শিশিরভেজা শিউলিঝরা কোনো এক শুভ্র সকাল
নদী – চর, বালুচর কোলাহলে দুলছে কত – শত কাশফুল।
সাদা – সাদা এলোকেশের দোলা, আকাশ ছুঁয়ে ভাসা শুভ্র মেঘের দল।
নৌকার পালে বিলাসী হাওয়া— শরতে শরতে মনে পড়ে সোনালী অতীত,
মনে পড়ে তোমার – আমার সেদিনের স্মৃতিময় দিনগুলো।
পাখপাখালির ঝাঁক, বাঁশবনে ডাহুকের হাঁক, বিলঝিলে ডুবো – ডুবো শালুক পাতাগুলো।
আঁধারে বুক চিরে, জোনাকির আলো ঘিরে, ঘোর লাগা চাঁদের আলো— তবুও কী যেনো নেই,
শরৎ আসে প্রতিমা’রা সাজে ঢাকঢোল হাঁকিয়ে আসোনা শুধু তুমি – তুমি – তুমি।
যখন রাত নামে
রেজাউল করিম রোমেল
যখন রাত নামে,-
প্রকৃতিতে নেমে আসে নীরবতা।
চারিদিকে শুনশান পরিবেশ,
চাঁদের আলোয়
আলোকিত হয় প্রকৃতি।
প্রকৃতিকে এনে দেয় অপূর্ব সৌদর্য্য,
আকাশের তারাগুলো মিটি মিটি
করে জ্বলছে।
রাস্তার ল্যামপোস্ট গুলো
নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে আলো দিয়ে যাচ্ছে।
পথচারীর দেখা নেই।
মাঝে মাঝে দূর-দূরান্তের কিছু
যানবাহন দ্রুত গতিতে
ছুটে চলে তাদের গন্তব্যে।
রাত গভীর হলে ঘুমিয়ে যায় প্রকৃতির
মানুষগুলো, প্রাণীকূল, গাছপালা।
শুধু জেগে থাকি আমি-
আর জেগে থাকে হুতুম পেঁচা।
আমি জেগে থাকি,-
একটি ভোরের অপেক্ষায়,
একটি দিনের অপেক্ষায়,
কখন ভোর হবে!
আলোকিত হবে প্রকৃতি…
শরতের দূত শুভ্ররূপা
সৌপর্ণ মাছুম
সুবাসিনী নও তবুও সুহাসিনীর বয়ন
শরতের দূত শুভ্ররূপা রূপে রূপে চয়ন ।।
চেয়ে চেয়ে যায় যে বেলা
ব্যোমে ভাসে ধবল ভেলা
তোমার শ্বেতাম্বরী রূপে আটকে পড়ে নয়ন ।।
রুক্ষ চিরল পাতায় দু’ধার শানিত খঞ্জরি
মুগ্ধ করা প্রসারিত দোলে শ্বেত মঞ্জরি
আসে দুর্গতিনাশিনী
খড়গ হাতে যেন চিনি
দূর করে সব ঘোর-অশনি শূন্যে করে শয়ন ।।
আরো পড়ুন- অনন্ত পৃথ্বিরাজের কবিতা