পদাবলিপ্রচ্ছদ

শিশির আজমের একগুচ্ছ কবিতা

শিশু যা পারে

ভেবে দেখেছি শিশুদের প্রতি অতো কনশাসনেস না দেখানোই ভাল

তুমিও তো শিশু ছিলে

আর বয়স বাড়তে বাড়তে আর রামপ্রসাদ আর শহীদ বেদিতে ফুল

আর মাছি মারা কেরানির ছেলে এখন মন্ত্রী হ্যা কত বড় হয়ে গেছ তুমি

কত বড়

পাঁচালী পড়া থামিয়ে এখন এই প্রশ্ন তো আমি করতেই পারি

অথচ দেখ কোন শিশুই নিজেকে নিয়ে ভয় পায় না

নিজের একটা চাঁদ বা একটা আগ্নেয়গিরির জন্য খুব সহজে

নিজেকে নিয়ে বাজি ধরতে পারে সে

মধ্যরাতের কুয়াশা কারখানা

ঘাসের ভিতর সূর্য আর ছাইপোকা
পৃথিবীর জন্মরহস্যের উঁকি

মশামাছি ঘুমোবে না
যেন রেলগাড়ি সুতোয় জড়ানো

আকাশ বলছে : একটু দাঁড়াও
আমার মেয়েকে ঘুম থেকে তুলে আনি

আমার চুলের মধ্য দিয়ে মাছ 
সাঁতার কাটছে
আকাশের পশ্চিম তারাটি
মা হারানো

আমি খুলে ফেলি আমার পোষাক
চোখ বন্ধ
দেয়ালের ওপাশ নির্জন
নিষিক্ত আলোয় ভবিষ্যৎ জাদুরাস্তা

কাঠপেঁচা গেয়ে ওঠে :
শিশিরে ভিজেছে ডানা
শিশিরে ঘুমায় রাস্তা

আমের বাগানে কুয়াশার কারখানা
যত জন্তুজানোয়ার
বিষাক্ত ব্যাঙের ছাতা
ভূগর্ভস্ত হাড়
রাফা সীমান্তের চাঁদ

 

 

শালিখ

শীতের শাখায় শালিখ

রোদে ঠোকর

 

তাহলে শালিখ আরেকটি নাম পাক

নিধুবাবু

কিংবা অন্য কেউ নিধুবাবু

কিংবা শালিখ

 

একসময় কবিতা লিখতে এখন সাবান কোম্পানির সেলসম্যান

তোমার কবিতা তোমার মটরশুঁটি

তোমার ডুব তোমার রোমান কলোসিয়াম

ওরা কি বাতাসে ঘুমোয়

ওরা কি বাতাসে হাঁটে

 

কুয়াশার ভিতর পাহাড়গুলো হেঁটে যাচ্ছিল

টলকাচ্ছিল

বলছিল আকাশের অনেক নাম

হাসির অনেক কাঁটা

 

দাঁড়াও নদীর কাছে

কীর্তন

না হয় তুমিই কীর্তন

না হয় শালিখ

 

 

মানুষ একা হতে পারে না

এতো এতো দিন একা থাকার পর

বুঝেছি

মানুষ একা হতে পারে না

একজন পশ্চিমা রাষ্ট্রদূত আর একজন সামরিক শাসকের

ডিনার টেবিলে যাদেরকে পাওয়া যায়নি

সেই মৃতরা

ছেড়ে যাওয়ারা

কাঁটারা

কেউই মানুষকে ছেড়ে দেয় না

এ-সুযোগ মানুষের নেই

 

 

মেঘে ঢাকা তারা

আমাকে একটা আলপিন দিন

খাবো

কাচের ভেতর পাউরুটি

জবাফুল

 

এটা না কি সূর্য এটা না কি দরজা

ফুলগুলো কাঁটাগুলো এতোদিন সাজিয়েছি শ্রদ্ধাভরে

দায়বদ্ধতায়

এখন দেখি কি মিথষ্ক্রিয়া

 

আমার ভেতর সম্ভাবনা দেখার

আমাকে নিয়ে চ্যারিটি করার

সুযোগ

আপনাকে দেবো না।

 

 

আরো পড়ুন- শিশির আজমের কবিতা