সুশান্ত হালদার এর কবিতাগুচ্ছ
প্রহর গোনা নক্ষত্র
আমিও হয়ত থাকবো না
তখন যদি লাল পতাকায় হু হু হাওয়া বদলে যায়
ঘন কুয়াশায় রৌদ্রের ঝিলিক যদি ক্ষিপ্ত উগ্র হয়
সমতট যদি সুনামি ভ্রুক্ষেপে তেজোদ্দীপ্ত বিপ্লবী হয়
তবে বুঝে নিও সভাসদ বন্ধুগণ….
তোমাদের অনুপস্থিতিতেই হয়ত একদিন
অসামঞ্জস্যতা খুঁজে নেবে জহুরুল আর বদুরুদ্দিন,
তবুও দিন শেষে বলতেই হয়
নাইক্ষ্যংছড়ির পাহাড় যেন প্রহর গোনা নক্ষত্র-ই হয়!
সুযোগ সন্ধানী
সুযোগ সন্ধানী যারা
হয়ত ভেবেছেন
জনগণ সব বোকাসোকা
তাড়ি আর মদের প্রার্থক্য বোঝে না,
তোমার যে অনুসন্ধিৎসু বাহানা
তা ত বুঝেছে জমিরন বেওয়া
টাকি প্রজাতির মাছে ভরে গ্যাছে খানাখন্দ আর নালা
সুযোগ সন্ধানী যারা
বুঝে গ্যাছে
দাবার কোটে আড়াই চলে কিস্তিমাতে অশ্বতেজের ঘোড়া !
[পাথরঘাটার (বরগুনা) তোফাজ্জল স্মরণে]
আঘাত
মৃত্যুর ঠিক আগ মুহূর্তে
‘সভ্যতার সংকট’ ছাপিয়ে
প্রত্যাশার যে আকুলতা
তাকেও হত্যা করেছি বঞ্চনাময় টেবিলে
মনে করেছিলাম,নীল রঙা আকাশ
ঢেলে দেবে বুকে হাপর টানা বাতাস,
কী এক অন্ধকার….
হঠাৎ ঢেকে দিল ক্ষণিকের পৃথিবী আমার
দোযখের আজাব
যতটুকু না দিয়েছে এই সমাজ
তারচেয়েও বেশি মনে হয়েছে ‘ঢাবির লাঠিপেটা আঘাত’!
দৃশ্যপট
বড় লজ্জার এ দৃশ্যপট
যজ্ঞের ঘিয়ে পান্তা খায় বৃদ্ধ বালক সনাতন,
আমি কি পেয়েছিলাম জন্ম থেকেই আদিমতার ঘ্রাণ?
বিদঘুটে এ সমাজ
নারী মাংসে বড়ো আত্মতুষ্টি আজ,
মাঝেমাঝে মূক হয়ে থাকি
খুনের সাদৃশ্যতায় নিজেকে দেখি, আর ভাবী
এ বড় লজ্জার
কৈবর্ত বংশে জন্ম নিয়ে…..
নারী লাঞ্ছনায় আমিও যুথবদ্ধ হলাম!
অলকানন্দা
আমাদের সূর্যাস্ত নেই
যে সূর্য উঠে ডুবে গ্যাছে বহুবার
আমরা তাকে খুন করে
ঝুলিয়ে দিয়েছি বৈদ্যুতিক খুঁটি তারে,
এখন বেতরাঙা মাছের সাঁতার দেখে
হিসু আসে বারবার
এটাকে অনেকেই বহুমূত্র রোগ বলে,
আমি বলি…
অতি গাঁজনে ছিঁড়েছে তার স্বর্গারোহী ‘অলকানন্দার’ !
আরো পড়ুন- জাহিদ আককাজ এর কবিতা