ফেদেরিকো গার্সিয়া লোরকার কবিতা
গিটার
গিটারের কান্নাকাটি
শুরু হয়।
ভোরের পানপাত্র গুলো
আছড়ে ভাঙ্গে।
গিটারের কান্নাকাটি
শুরু হয়।
একে থামাতে চাওয়া
বেকার।
একে থামাতে চাওয়া
বেকার।
এটা একঘেঁয়ে ভাবে কাঁদে
যেমন কাঁদে জলধারা
যেমন বাতাস কাঁদে
তুষার ঢাকা মাঠের ‘পর।
একে থামানো অসম্ভব।
এটা দূরের বস্তুর জন্য কাঁদে।
দক্ষিণের গরম বালি
সাদা ক্যামেলিয়ার জন্য
আকুলিবিকুলি করে।
লক্ষ্য ছাড়া তীর কাঁদে।
সকাল ছাড়া সন্ধ্যা
আর গাছের শাখায়
প্রথম মরা পাখি।
ওহ্ গিটার!
পঞ্চরিপুর আক্রমণে
মরণশীল জখম হৃদয়।
মূল কবিতা: লা গিটারা
একটি দৃশ্য
জলপাই গাছের মাঠ
খোলে আর বন্ধ হয়
যেন একটি পাখা।
জলপাই বীথিকার কাছে
আছে এক ডুবন্ত আকাশ
আর শীতল আলোর
আঁধার বারিধারা।
নদীর তীরে উলুখাগড়া
কাঁপে আর কালো হয়।
ধূসর বাতাসে ঢেউ উঠে
জলপাই গাছের শাখাগুলো
আর্তনাদের ভারে নুয়ে পড়েছে।
বন্দী পাখির ঝাঁক
তাদের অনেক লম্বা লেজগুলো
নড়াচ্ছে আঁধারের সীমানায়।
মূল কবিতা: ল্যাণ্ডস্কেপ
আমার ছায়া
আমার ছায়া নিরব হয়ে যায়
একাশিয়া গাছের জলফোঁটায়।
আমার ছায়ায় থাকে ব্যাঙেরা
যাদের বঞ্চিত করেছে তারকারা।
ছায়াটা চালায় আমার দেহকে
স্থবির বিশ্বাসের প্রতিফলনে।
আমার ছায়া ছুটে অবিরাম
বিষম বিচিত্র বেগুনি বর্ণচ্ছটা।
শ’খানেক ঝিঁঝি সজোরে চায়
যেন নলখাগড়ার বন চকচকায়।
আমার বুকে জন্ম নেয় এক শিখা
গভীর পরিখা হতে ঠিকরে আসা।
মূল কবিতা: দেবুশি
ছোট্ট বোবা ছেলেটা
ছোট্ট ছেলেটা তার কণ্ঠস্বর খুঁজছিল।
এটা ছিল ঝিঁঝিদের রাজার কাছে।
এক বিন্দু জলের মাঝে
ছোট্ট ছেলেটা তার কণ্ঠস্বর খুঁজছিল।
আমি এটা কথা বলার জন্য চাই না
আমি এটা দিয়ে একটি আংটি বানাবো
যাতে সে আমার নিরবতা পরতে পারে
তার ঐ ছোট্ট আঙ্গুলটায়।
এক বিন্দু জলের মাঝে
ছোট্ট ছেলেটা তার কণ্ঠস্বর খুঁজছিল।
বন্দী সে কণ্ঠস্বর, অনেক দূরে
পরে ছিল ঝিঁঝিপোকার পোশাক।
মূল কবিতা: দি লিটল মিউট বয়
যদি আমার হাত পাপড়ি ছিঁড়তে পারতো
আমি তোমার নাম উচ্চারণ করি
রাতের গহীন অন্ধকারে, যখন
তারকারা পান করতে আসে চাঁদে
ঘুমায় লুকোনো পাতার গুচ্ছে।
আর আমি নিজেকে খুঁজে পাই
আবেগ ও সঙ্গীতের বিবর মাঝে।
মাথা খারাপ ঘড়িটা গেয়ে ওঠে
মৃত প্রাচীন সময়ের ঘন্টাধ্বনি।
আমি তোমার নাম উচ্চারণ করি
এই গাঢ় অন্ধকার রাতটায়।
আর তোমার নামের ধ্বনি
অনুভূত হয় কোন দূরবর্তী প্রান্তে,
তারার রাজ্য থেকেও অনেক দূরে,
আর শীতের বৃষ্টির চেয়েও করুণ।
আমি কি তোমাকে ভালোবাসবো
সেই আগেরই মতো?
আমার হৃদয়ের কি দোষ আছে?
যখন কুয়াশা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়,
আর কোন আবেগ আশা করবো?
এটা কি শান্ত আর বিশুদ্ধ হবে?
যদি আমার আঙুল গুলো পারতো
চাঁদের সমস্ত পাপড়ি ছিঁড়ে ফেলতে!
মূল কবিতা: সি মিস ম্যানোস পুডিয়েরান দেসোজার
আরও পড়ুন: টিটো মোস্তাফিজের কবিতা
ফলো করুন: পরমপাঠ ফেসবুক পেজ