প্রচ্ছদসাক্ষাৎকার

কবি মাহদী মল্লিকের সাক্ষাৎকার

কবি মাহদী মল্লিক বরিশালের ঝালকাঠি জেলায় ১৪ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা : মোঃ মামুন মল্লিক ও মাতা : হালিমা বেগম।

এখন অব্দি তাঁর লিখা চারটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। ১. ‘সাপলুডুর রঙ্গমঞ্চ’ অমর একুশে বইমেলা- ২০২১। (উৎসব প্রকাশন) ২. ‘টং দোকানে কর্তামশাই’ কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলা- ২০২৩। (বল্মীক প্রকাশন।) ‘তোমারে নিয়াই যতো গুঞ্জন’ এবং ‘হৃদয়পুর বাসস্টপ।’ অমর একুশে বইমেলা- ২০২৫। (বই অঙ্গন প্রকাশন। 

কবিতা ও নানান প্রসঙ্গে পরমপাঠ এর সাথে কবি মাহদী মল্লিকের কথোপকথন-

কেমন আছেন ?

: ভালো আছি, তবে বিষণ্ণতা সঙ্গী করে। জীবন এমন হয়ে গেছে যেন কোনো দিন বিষাদ-বিষণ্ণতা না থাকলে আর ভালো থাকা হয়ে ওঠে না।

 

লেখালেখির শুরুটা কিভাবে?

: লেখালেখির শুরুটা একদমই হঠাৎ করে হয়ে যায়। এর পিছনে অবশ্য একটি গল্পও রয়েছে।

যেদিন প্রথম লেখি সেই দিন সম্ভবত ২০১৪  সাল চলছিল৷ তখন বৃষ্টি হচ্ছিল খুব। আর আমি আমাদের ঘরের সামনে দাঁড়িয়ে বৃষ্টি উপভোগ করছিলাম। ছোট বেলা থেকেই বৃষ্টির প্রতি একটা দারুণ অনুভূতি কাজ করতো। ঠিক তখনই আচমকা হৃদয়ে যেন সঞ্চারিত হয়ে উঠলো একটি বাণী ‘আরে আমি তো লিখতে পারি। তাহলে লিখছি না কেনো!’ তারপর আমি খাতা-কলম হাতে নিয়ে লিখে ফেললাম ‘বৃষ্টি’ শিরোনামের একটি কবিতা। কবিতা বললে ভুল হতে পারে, হয়তো ছড়া লিখেছিলাম সেদিন। মূলত এ-ক্ষেত্রে বৃষ্টিই/প্রকৃতিই আমার অনুপ্রেরণা জাগিয়েছিল এবং সেই জন্য আমার লেখার বিষয় বস্তুও সেই দিন ছিলো ‘বৃষ্টি।’ এই যে লেখালেখির শুরুর স্মৃতি, গত হওয়ার আগ পর্যন্ত স্মরণে থাকবে নিশ্চয়ই।

এই যে নিজের সাথে হঠাৎ নিজের কথা বলা, লেখা প্রতি আগ্রহ তৈরি হওয়া। সেই জায়গা থেকেই মূলত আমার লিখালিখির যাত্রা শুরু।

তারপর সম্ভবত এক-দেড় বছর লেখিনি৷ পরবর্তীতে সম্ভবত ২০১৬ সালের শেষ দিকে আবার লেখালেখি শুরু করি। এর পিছনেও একটি গল্প রয়েছে। তখন আমি এক শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট পড়তাম। নাম শহীদুল্লাহ্ সুমন। তিনি আমার খাতা খুলার সময় একদিন দেখতে পেলেন খাতার শেষ পৃষ্ঠায় একটি কবিতা লিখা। (সেই ‘বৃষ্টি’ নামের কবিতাটি।) তারপর তিনি জিজ্ঞাসা করলেন কবিতাটি কে লিখেছে। তারপর আমি উত্তর দিলাম কবিতাটি আমার লিখা। এরপর তিনি পরবর্তীতে ধারণা দিলেন কিভাবে কবিতা লিখতে হয়। সেই থেকে ডায়েরিতে/খাতায় কবিতা লিখতাম।

ফেসবুকে যে কবিতা লিখা যায়, সাহিত্য চর্চা হয়, বিভিন্ন সাহিত্য গ্রুপ রয়েছে এটা জানতে পারি ২০১৭ সালের দিকে। এরপর থেকে অনলাইনেও লেখালেখির যাত্রা শুরু হয়। তারপর তো এখন এই পর্যন্ত আসা। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন সময়ে, বিভিন্ন ভাবে উত্থান-পতনের গল্প।

 

প্রকাশিত বইগুলো নিয়ে কিছু বলুন

: আমার প্রথম কবিতার বই প্রকাশিত হয় অমর একুশে বইমেলা-২০২১ সালে। উৎসব প্রকাশনের প্রকাশক ‘সাঈদ আহমাদ’ হঠাৎ করে একদিন বললেন আমাকে ‘পাণ্ডুলিপি’ দেয়ার জন্য, বই বের করবেন। কিছুটা বিস্মিত ও হয়েছিলাম কেননা তখনো বই বের করার মতন কোনো পরিকল্পনা কিংবা চিন্তাভাবনা ছিল না। পরে আমি একটি করে কবিতা লিখতাম আর সাঈদ আহমাদ কে দেখাতাম যে বই প্রকাশের জন্য কবিতা মানসম্পন্ন রয়েছে কিনা। মূলত এভাবেই প্রথম বই ‘সাপলুডুর রঙ্গমঞ্চ’ বের করার যাত্রা। পরবর্তীতে ইচ্ছে রয়েছে কোনো এক সময় এই বইটার সংস্করণ নিয়ে আসবো, যাতে কিছু কবিতা বাদ দিয়ে/সম্পাদনা করে বইটির একটি পূর্ণাঙ্গ ভাব বজায় রাখতে পারি। এরপর দ্বিতীয় কবিতার বই ‘টং দোকানে কর্তামশাই’ বের হয়-২০২৩ সালের কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলায় বল্মীক প্রকাশন থেকে। এ বইটি পাঠক খুব দারুণ ভাবে গ্রহণ করেছে। এরপর আমার তৃতীয় ও চতুর্থ কবিতার বই ‘তোমারে নিয়াই যতো গুঞ্জন’ (প্রেমের কবিতার বই) ও ‘হৃদয়পুর বাসস্টপ’ (ছোট কবিতার বই) অমর একুশে বইমেলা-২০২৫ উপলক্ষ্যে একই সাথে বের হচ্ছে ‘বই অঙ্গন প্রকাশন’ থেকে। বইগুলো পাওয়া যাবে বইমেলার ২৪ নম্বর স্টলে।

 

এখন কী লিখছেন?

: আমি মূলত কবিতার মানুষ। অন্য কিছু ভাববার বা লিখবার আগে কবিতাকে এক ধাপ সামনে এগিয়ে রাখার চেষ্টা করি সবসময়ই। যেন সাহিত্যে কবিতা আমার কাছে ‘শিকড়’ আর বাকি সব ‘ডালপালা।’ এ জন্য শিকড়কে সবসময়ই মগজের উর্বর ভূমি দেয়ার চেষ্টা করি যেন ডালপালাও সতেজ থাকতে পারে এবং ভালো ফলন ধরে। এ-ছাড়াও সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার ইচ্ছে রাখি। এ-ক্ষেত্রে গল্প, উপন্যাসে ও আমার জোরালো আগ্রহ রয়েছে। বেশ কয়েকবার উপন্যাস লিখা শুরু করেছি কিন্তু শেষ করতে পারিনি, মূলত ধৈর্যের সাথে পেরে উঠিনি। হয়তো এ বছর একটি উপন্যাস লিখবো। আর ২০২৩ সালে কয়েকটি ছোট গল্প লিখেছি৷ ওগুলোর সাথে আরো কিছু গল্প নিয়ে হয়তো উপন্যাসের আগে ছোট গল্পের বই বের হতে পারে। আর কবিতা তো সবসময়ই আছে এবং থাকবে।

 

আপনার লেখালেখির বিষয়বস্তু বা উপজীব্য নিয়ে বলুন।

: আসলে চাইলে তো অনেক বিষয় নিয়েই লেখা যায়। সফল কবি/সাহিত্যিকরা তো ধূলো থেকে ফুল, নর্দমা থেকে স্বর্গ, ইহকাল থেকে পরকাল সব বিষয় নিয়ে লিখে গেছেন। কোথাও যেন এমন একটি বাণী পড়েছি যে, পৃথিবীর সব উপাদানের ভিতরে কবিতা রয়েছে। আমি সেটা কিভাবে উপস্থাপন করবো, কিভাবে একটা বিষয়কে কবিতা করে তুলবো এটা আমার রচনাশৈলীর দক্ষতার উপর নির্ভর করবে।

তবে আমার যতোটা ধারণা, আমাকে যারা নিয়মিত পড়েন কিংবা সমালোচকরা রয়েছেন, তাদের ধারণা আমি কেবল প্রেম নিয়েই কবিতা লেখি। তারা অনেক ক্ষেত্রে এ নিয়ে ঠাট্টাও করেন। কিন্তু এতে আমার মনমালিন্য হয় না। কেননা প্রেম আছে বলেই এই জগৎ সংসার আছে। প্রেমই মানুষের হৃদয়ের আহার।

তবে আরো একটি বিষয় জানাতে চাই যে, যারা আমার প্রকাশিত বই পড়েননি তাদের জানা উচিত যে আমার প্রথম কবিতার বইয়ে যেমন প্রেম এসেছে, তেমনি এসে রাজনীতি-সমাজ ও মানুষের কথা। তেমনি ভাবে দ্বিতীয় কবিতার বইয়ের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে রাজনৈতিক কবিতা ও সাম্যের বাণী। এ-ছাড়া আমি অসংখ্য মুহূর্ত কবিতায় নিয়ে এসেছি সমাজের নানান উপদান৷

তবে সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাই প্রেমের কবিতা লিখতে৷ কাউকে ভালো না বাসতে পারলে আমি হয়তো মরেই যেতাম। মানুষ মূলত বই না পড়ে, ফেসবুকে পড়েই কেবল মন্তব্য করেন। তাদের অনুরোধ জানাবো যেন বই ও পড়েন।

 

আসন্ন বইমেলার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাই

: বইমেলা নিয়ে বিশেষ কোনো প্রস্তুতি নেই। তবে যেহেতু এবারের বইমেলায় আমার একই সাথে একই প্রকাশনির ব্যানারে দু’টো কবিতার বই বের হচ্ছে। তাই আনন্দটাও দ্বিগুণ। আমি সবসময়ই বই কিংবা কবিতা নিয়ে কথা বলতে আনন্দ পাই কোনো ফুটন্ত ফুটে থাকে ফুলের সুবাস নেয়ার মতন। তবে এর মধ্যেও এই পুরো ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে বইমেলা চলছে৷ বিভিন্ন নবীন-প্রবীণ কবি/সাহিত্যিক/পাঠকরা এক সাথে হবে, বই নিয়ে আড্ডা হবে, আলোচনা হবে, নতুন বইয়ের আগমনে বাংলা সাহিত্যের ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হবে এটা ভাবলে তৃপ্তি লাগে।

আমি তো চাই বছরের বারো মাস একেকটা বিভাগে এক মাস করে বারোমাসই বইমেলা চলুক। এতে যেমন আর্থিক ভাবে রাষ্ট্র লাভবান হবে, তেমনি করে শিল্প-সংস্কৃতি ও এগিয়ে যাবে। মানুষ শিক্ষিত হবে, বই পড়ার প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়বে এবং সৃজনশীলতা তৈরি হলে রাষ্ট্র ও এগিয়ে যাবে। সমাজ পাবে অসংখ্য বুদ্ধিজীবী।

 

পাঠকদের থেকে একজন লেখকের প্রত্যাশা কি থাকে? আপনার ক্ষেত্রে তার প্রভাব কি?

: পাঠক মূলত বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। ধরুণ জসিমউদদীন কিংবা জীবনানন্দ দাশ দু’জনেই কিন্তু গ্রাম, সমাজ, প্রকৃতি নিয়ে লিখেছেন৷ অথচ জসিমউদদীনকে আমরা জানি পল্লী কবি হিসেবে আর জীবনানন্দ দাশকে রূপসী বাংলার কবি৷ আবার তেমনি ভাবে জীবনানন্দ দাশ ও কাজী নজরুল ইসলাম একই সনে জন্মগ্রহণ করলেও কোনো পাঠক পছন্দ করেন জীবনানন্দ কেউ বা নজরুল। ঠিক তেমনি ভাবে আমাকেই নিজেকে পাঠকের মধ্যে বপন করেছি। কেউ আমার কবিতার যত্ন নিবে, চর্চা করবে, এনজয় করবে আবার কেউ ফেলে রাখবে। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আমাকে নিয়ে যেন চর্চা করে এমন পাঠক তো সবসময়ই প্রত্যাশা থাকে। লিখা ভালো লাগলে পাঠক নিশ্চয়ই গ্রহণ করবে। আর প্রভাব বলতে আমার কাছে যেটা মনে হয় সেটা হলো ‘তরুণ থেকে প্রবীণ’ সব শ্রেণির পাঠকই আমার রয়েছে। আর আমিও চাই যেন কোনো নির্দিষ্ট গণ্ডীর মধ্যে বিঁধে না থাকি। বাকিটা পাঠকরাই গ্রহণ – বর্জন করবে। এটা মূলত তাদের হাতে।

 

প্রকাশকদের ব্যাপারে আপনার মন্তব্য চাই।

: প্রকাশকদের নিয়ে তেমন কিছু করার নেই৷ আবার দীর্ঘ আলাপ ও রয়েছে। দীর্ঘ আলাপে যাবো না। তবে দেশে কিছু কিছু প্রকাশক যেমন বইয়ের বাজার প্রসারিত করার চেষ্টা করছে, পাঠক ও লেখক তৈরির চেষ্টা করে যাচ্ছে। আবার কিছু প্রকাশক নবীনদেরকে ঠকাচ্ছে, বই প্রকাশের নাম করে টালবাহানা করছে। এ দিকটায় প্রকাশকদের ঈমানদার হতে হবে। পাশাপাশি বাংলা একাডেমিও এ দিকটায় নজর রাখা দরকার।

 

কবি বা লেখকের কি স্বীকৃতি প্রয়োজন আছে? কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা ব্যাপারটিকে কিভাবে দেখেন?

: আমার কাছে মনে হয় কবির কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে স্বীকৃতির প্রয়োজন নেই। কবিরা যেমন কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে কবি হন না, তেমনি ভাবেই কবিদের প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির প্রয়োজন নেই। তবে হ্যাঁ, প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির মাধ্যমে অনেক সময় অনেক কবি, সাহিত্যিক, ঔপন্যাসিকরা অনুপ্রেরণা পায় তারপর সাহিত্যে আরো মনোনিবেশ করে। এ-ক্ষেত্রে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখযোগ্য।

 

লোকে বলে কবিরা ভাতে মরে- এ নিয়ে কিছু বলুন

: ‘কবিরা ভাবে মরে’ এটা একটি চলিত প্রবচনের মতন হয়ে গেছে। মূলত সত্যতা রয়েছে বলেই হয়তো কবিদের মুখে মুখে এ-কথাটি শোনা যায়। আপনি যদি খেয়াল করে দেখেন আধুনিক যুগে এসে গল্প-উপন্যাসে যেমন ভাবে পাঠক বেড়েছে, গল্প-উপন্যাসের যেমন বাজার তৈরি হয়েছে তেমনি ভাবে কবিতার পাঠক কিংবা বাজার তৈরি হয়নি। যার কারণে অনেক ভালো কবি-লেখকরা বই বের করলে বই বিক্রি হয় না। এই জন্য কোনো কবিই চান না কেবল কবিতা লিখেই অর্থ উপার্জন করবেন। তাই কবিতা লেখাটা যেন হয়ে আছে ফোর সাবজেক্ট।

তবে হ্যাঁ, বর্তমানে কিছু নবীন কবি রয়েছে যারা কবিতার বাজার তৈরি করার চেষ্টা করছে, মানুষকে কবিতার ভিতর নিয়ে আসতে চেষ্টা করছে এটা দারুণ।

 

একজন লেখক কবির জন্য পড়াশোনা (সাহিত্য পাঠ) কতটুকু জরুরী?

: আমাকে মাঝে মধ্যেই দু/একজন কাছের তরুণ লেখকরা প্রশ্ন করে থাকেন কিভাবে ভালো কবিতা লেখা যায়৷ আমি প্রত্যেককে একই উত্তর দিই যে কবিতা পড়তে হবে এবং পড়ার পাশাপাশি লিখতে হবে৷ বই পড়লে মগজে লেখার থিম তৈরি হয়, নতুন নতুন শব্দ জানা যায় এবং বর্তমানে লেখকরা কিভাবে লিখছে, আমাদের চেয়ে যারা প্রবীণ কিংবা তারও আগের সাহিত্য কিভাবে ছিল এ সম্পর্কে ধারণা নেয়া যায় ।

তাই ভালো কবিতা লেখার জন্য ভালো কবিতার বই পড়তে হবে এবং নিয়মিত লিখতে হবে। এ-ছাড়াও বাস্তব জীবনকে উপলব্ধি তো করতেই হবে। এক সময় সাহিত্য ছিল অতি লৌকিক, দেব-দেবী, ঈশ্বর নির্ভর এখন তার পরিবর্তন এসেছে। মানুষের কথা বলা হচ্ছে। এই জন্য বাস্তবতা ও মানব জীবন ও যাপন সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অর্জন করা জরুরি। তাহলেই ভালো লিখা সম্ভব।

 

নিজের লেখালেখি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, প্রাপ্তি, প্রত্যাশা জানতে চাই।

: আমার লেখালেখি নিয়ে আলাদা করে কোনো পরিকল্পনা এখনো ঠিক করা হয়নি। তবে হ্যাঁ, কবিতা লিখে যাচ্ছি, লিখতে পারছি এটা আনন্দের। এ-ছাড়াও ২-১ লাইনের মুহূর্ত কবিতা/শের/ম্যাক্সিম এ নিয়ে দীর্ঘ যাত্রা করতে চাই ইহকাল ও পরকালে। প্রায়ই মনে হয় আমি মূলত ‘শের’ এর মানুষ। ইচ্ছে রয়েছে হাজার- হাজার শের লিখবো। মোটা মোটা বই বেরুবে একদিন। হা হা হা। এটা মূলত লেখার সংখ্যা হিসেবে নয়, লক্ষ্য। লক্ষ্য নিয়ে এগোতে চাই।

আর লেখালেখির প্রাপ্তি মূলত এই যে, যেমন আপনাদের ভালোবাসা পাচ্ছি। মানুষ আমার কবিতা পড়ছে। কবিতার মধ্যে তাদের বাস্তব জীবনকে উপলব্ধি করছে। এর চেয়ে বড়ো প্রাপ্তি আর কিছুতে নেই। এবং প্রত্যাশাটা মূলত নিজের আয়ুর কাছে থাকবে যেন আরো কয়েকটা বছর লিখে যেতে পারি জীবদ্দশায়।

 

যারা লিখতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।

: বর্তমানে অনেক তরুণ কবি ভালো কবিতা লিখছে৷ সম্ভবত আগামী দুই যুগ পরেই আমরা এক সাথে এক ঝাঁক কবির আবির্ভাব লক্ষ্য করবো। তাই সেই তরুণদেরকে বলবো যারা কবিতা লিখছেন, লিখতে থাকুন। লিখা বন্ধ করবেন না। আপনি কবিতা লিখা বন্ধ করলে বন্ধ হয়ে থাকবে একটা শব্দ, একটা বাক্য,  একট অনুভূতি, একটা হৃদয় কিংবা একটা সমাজ। বন্ধ হয়ে যাবে একজন কবি পাবার সম্ভবনা৷ তাই লিখতে থাকুন মনের মতন করে, যা ইচ্ছে তাই।

 

আরও পড়ুন- মাহদী মল্লিকের অণুকবিতা

ফলো করুন- পরমপাঠ সাহিত্য পত্রিকা