কথাসাহিত্যপ্রচ্ছদ

রাধাচূড়ার ফাগুন- সজীব হুমায়ুনের গল্প

ফাল্গুন মাসের শেষের দিক। অনেকটা গরমের ভাব চলে এসেছে। সারাদিন হুহু করে বাতাস বয়। গাছের পাতা ঝরে পরেছে। শুধু ডাল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক গাছে নতুন পাতা গজিয়েছে। অনিন ক্লান্ত হয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরে। উপমা ব্যকুল হয়ে অপেক্ষা করছিল৷ অনিন এতো দেরি করে না কখনো। খুব চিন্তা হচ্ছিল অনিনের জন্য। উপমা জিজ্ঞেস করতেই অনিন বলে, তোমার জন্য একটা উপহার কিনতে গিয়ে দেরি হলো। কয়েক দোকান ঘুরে তারপর পেয়েছি।

আচ্ছা যাও, হাত মুখ ধুয়ে আসো।  অনিন হাত মুখ ধুয়ে আসে। উপমা দুই মগ কফি নিয়ে ঘরে আসে। অনিনের হাতে কফির মোগ দিয়ে অনিনের একদম সামনে বসে। উপমা বলে, আমার জন্য কি উপহার এনেছো? অনিন মৃদু হাসে। উঠে ব্যাগ থেকে দুইটা প্যাকেট বের করে। উপমার সামনে এসে হাটু মুড়ে বসে। প্যাকেট খুলে একটা শাড়ী বের করে। উপমার সামনে মেলে ধরে। লাল রঙের শাড়ী। শাড়ীটা খুব সুন্দর। উপমার খুব পছন্দ হয়। শাড়ী পেয়ে অনেক খুশি হয় উপমা। শাড়ীটা হাতে নেয়। যেন অনিনেন ভালোবাসা এই শাড়ীতে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে আছে। উপমা তা একটুখানি ছুঁয়ে দিতেই কেমন একটা অদ্ভুত শিহরণে সমস্ত শরীর কেঁপে ওঠে। অনিন একটা মোড়ানো খাম উপমার হাতে দিয়ে খুলতে বলে। উপমা কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞেস করে কি আছে এতে?  খুলে দেখো। নিজে খুলে দেখার মধ্যে অন্য রকম এক উচ্ছ্বাস আছে উপমা।

 

উপমা আর কথা বাড়ায় না। দ্রুত খাম খোলায় ব্যস্ত। খাম খুলে দেখো “শেষ বিকেলের মেয়ে ” জহির রায়হানের বিখ্যাত উপন্যাস। উপমা ভীষণ খুশি এবং অবাক দুটোই হয়। শাড়ী এবং বই যে কোন মেয়েই পেলে অনেক খুঁশি হবে। উপমা চট করে ওঠে পাশের ঘরে গেল শাড়ী পড়তে। অনিনদের হয়েছে দুই মাস। উপমা অনিনের ভাবীর বিথীর ফুপাতো বোন। বিয়ের আগে কখনো দেখেনি দুজন দুজনকে। বিথীই বোন আর দেবরের বিয়ের সমস্তটা করেছে। অনিনের মতো ভালো ছেলের কাছে তার বোন ভালো থাকবে সে এটা ভালোই জানে।

উপমা শাড়ী পড়ে ঘরে ঢুকলো। লাল শাড়ীতে কি ভীষণ সুন্দর লাগছে উপমাকে। অনিন চোখের পাতা ফেলতে পারছে না। কি যেন একটা মায়া আছে উপমার মধ্যে। সামনের চুল গুলো উড়ছে। অনিন উঠে উপমার সামনে এসে কালো টিপ কপালে পড়িয়ে দেয়। মুহুর্তেই যেন উপমার সৌন্দর্য্য কয়েকগুণ বেড়ে যায়। উপমার ঠোঁট কাঁপেছে। অনিন সেই কাঁপা ঠোঁটের খুবটা কাছে নিয়ে আসে তার ঠোঁট। হঠাৎ দরজায় কে যেন কড়া নাড়ে। উপমার ভীষণ লজ্জ্বা লাগে। বিথী ঘরে আসে। অনিন কেমন যেন চুপসে যায়। মনে মনে বলতে থাকে। ভাবী তোমার এখনই কেন আসতে হবে? পরেও তো আসতে পারতে। তোমার কি সময় জ্ঞান একদমই নেই ভাবী। কিন্তু সেই সব বিথীর কান পর্যন্ত পৌছায় না।  অনিন বাবা তোকে ডাকছে।  আচ্ছা ঠিক আছে ভাবী। তুমি যাও আমি আসছি।

 

বিথী চলে যায়। উপমা লজ্জ্বায় চুপসে যায়। অনিনের দিকে তাকায় না। অনিন স্যরি বলে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। রাত যত গভীর হয় জ্যোস্নার আলো ভাসিয়ে দেয় এই জগত সংসারকে। দুর্বার মোহে গৃহত্যাগী জোছনার পিছু ছোটে জগত সংসার। তাকে উপেক্ষা করার সাধ্য কি আছে উপমার। ভরা যৌবনা তরণী কি করে তা উপেক্ষা করে! অনিন আসতেই চট করে বলে, এই অনিন চলো না ছাদে যাই। বাহিরে কি সুন্দর জোছনার আলো। আজ পূর্ণিমার আলোয় ভেসে যাচ্ছে সমস্ত সঞ্চয় যা বসুন্ধরা জমিয়ে রেখেছিল প্রকৃতির কাছে।

হুম….। চলো যাই। বাহিরে খুব ভালো লাগছে। বাতাস বইছে। জোছনার আলোয় বসে গল্প করতে বেশ ভালো লাগবে। হ্যাঁ অনিন। অনেক দিন হয় আমরা আড্ডা দিই না।

 

এমন উপচে পড়া জোছনায় সন্ধ্যার বর্ণিল আলোকসজ্জা ছেড়ে জোছনার আলোয় ভেসে যেতে যে কেউ চাইবে। এমন গৃহত্যাগী জোছনাকে উপেক্ষা করবে সে সাধ্য আছে কার!! বসন্তের কৃষ্ণচূড়ার গন্ধে ভাসছে উপচে পড়া গৃহত্যাগী জোছনা। অনিন, উপমা ছাদের দক্ষিণ দিকটায় বসলো। কড়ই গাছের একটা প্রকান্ড ডাল এসেছে ছাদের এই দিকটাতে। ফুল পরে ছেঁয়ে গেছে। বিকেলে এখানে বসে থাকতে খুব ভালো লাগে। বিকেলের পরিবেশটা খুবই চমৎকার। অবশ্য এমন জোছনা রাতে খারাপ লাগার কোন কারণই নেই। ভরা যৌবনা জোছনার আলোয় ভেসে আসা ফাগুনের প্রথম স্পর্শে শিহরণ জাগে। মনের গহীনে উঁকি দেয় বসন্ত রাতের ভেসে যাওয়া মাতাল হাওয়ায় কড়ই ফুলের গন্ধে বিভোর ছায়ামূর্তি। এমন মাদকতায় বিভোর হয়ে আছে দুজন তরুণ তরুণী। তাদেরকে ঘিরে রেখেছে অদৃশ্য এক মাদকতা। যেখানে উচ্ছ্বসিত আবেগের রঙ ফিরে পায় নিজস্বতা। নক্ষত্রের মেলা বসেছে ছাই রঙা আকাশের বিশালতায়। সেখানে গভীর আবেদনে কেবল মাত্র জমতে থাকে দুটি মানুষের কাছে আসার অজুহাতে একটুখানি ছুঁয়ে দেখা। একটুখানি অনুভব করা। এ যেন নক্ষত্রের রাতে অস্তপারের সন্ধ্যাতারায় ভালোবাসার গল্পে আবির্ভাব সমস্ত সঞ্চয়ের। জীবনের লেনাদেনায় সেসবের কোন কিছুই ছাপ ফেলতে পারে না।

 

এই উপমা, তোমাকে চাদের আলোয় কেমন যেন রহস্যময় লাগছে। কি ভীষণ স্নিগ্ধ লাগছে।

ধুর, কি যে বলো না তুমি।

সত্যি বলছি। তোমার হাসি স্পন্দন কাঁপিয়ে দিচ্ছে। চাদ আর তুমি মিলেমিশে একাকার।

অনিন, অনিন্দ্য সুন্দর কখনো আমাদের ভাবনার জগতকে ছুঁয়ে যায় আবার কখনো বা নির্বাক চেয়ে রয়। অথবা কখনো ছুঁতে পারে না। নাড়া দিতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়।

তোমার কোনটা হয়েছে উপমা?

আমাদের জীবনে কিছু কিছু মুহুর্ত আসে। যখন আমরা কিছু অনুভব করতে পারি, আবার অনুভব করতে পারি না। বুঝতে পারি, আবার বুঝতে পারি না।

সময়ের দ্যোতনায় আমরা কেমন যেন ফিকে হয়ে যায় তাই না উপমা!

জানো অনিন, আজকে আমাদের বাড়ির পাশের রহিম চাচার ছেলে আকবর ভাই মারা গেছে। মরিশাসে থাকতো ওখানেই মারা গেছে। আকবর ভাই খুব ভালো মানুষ ছিল। সাদা সিধে মানুষ। আমরা প্রিয় মানুষদেরকে ভালো রাখতে নিজ দেশ পর্যন্ত ছাড়ি!

হ্যাঁ, উপমা। একটু ভালো রাখা। একটু সুখে রাখতে কত কিছুই না করি।

অনিন, আমি কখনো তোমাকে ছাড়া এক মুহূর্তও আমি থাকতে চাই না।

প্রিয় মানুষকে ছেড়ে দূরে থাকার মতো অসহনীয় যন্ত্রণা দ্বিতীয়টি আর কিছু নেই উপমা।

হ্যাঁ, অনিন।

 

উপমা, আমার বন্ধু রাহুল ছিল না? আজ রাহুলের বাবার সাথে দেখা হয়েছিল বাজারে। মলয় কাকা আমাকে দেখে দৌড়ে এসে জড়িয়ে ধরে। রাহুলের কথা বলতে বলতে চোখের পানি আর ধরে রাখতে পারে না। এতো গুলো বছরে সব কিছু বদলেছে শুধু বদলায়নি কিছু মানুষের অনুভূতি। আগের থেকে অনেক ভেঙে পড়েছে মলয় কাকা।

 

রাহুল বয়সে আমার থেকে বছর পাঁচেকের বড়। আমাদের পুরনো বাড়ির পাশেই ওদের বাড়ি ছিল। আমাদের বাড়ির দু-বাড়ি পরেই ওদের বাড়ি। আমরা এক সাথেই পড়তাম। ওর নাম ছিল রাহুল। রাহুল দাস। ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত এক সাথে পড়েছি। আমি সিক্সে ভর্তি হলাম আমাদের বাড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরের একটা হাই স্কুলে। বেশ নাম ডাক হয়েছে সেই স্কুলের। আর রাহুল ভর্তি হলো আমাদের গ্রামের স্কুলে। ঐ যে বাড়ির পাশের যে হাই স্কুলটা। তার পর আমরা যখন অষ্টম শ্রেণীতে তখন ও মালয়েশিয়া চলে যায়। পরিবারের একটু সচ্ছল অবস্থা জন্য। ওর দুলাভাই থাকতো ওখানে। সব ব্যবস্থা ওর দুলাভাই ই করেছিল।

ভালোই চলছিল সবকিছু। পরিবারের অবস্থাও বেশ সচ্ছল হয়ে যায়। ওদের পরিবারটা ছিল বেশ বড়। ওর বড় তিন ভাই, সবাই সেলুনের কাজ করতো। ওর বাপ আর ওর মা বাঁশের কাজ করতো। ওই টোপা, ডালা, চালুন, ঝুড়ি ওগুলো বানাতো।

আমার সাথে প্রায় রাতেই কথা হতো। আমরা এক সাথে কত খেলাধুলা করেছি। কত আড্ডা দিয়েছি……!

 

আজ সব কেমন অতীত উপমা।

থামলে কেন? তারপর কি হলো রাহুলের? রাহুল কি এখনো মালয়েশিয়াতেই আছে নাকি ফিরে এসেছে?

রাহুল আর কখনোই ফেরেনি। এক দিন হঠাৎ করে খবর পাই রাহুল নেই…..!! আমি তখন সবে মাত্র কলেজে উঠেছি। সেদিনও প্রত্যেক দিনের মতোই সকালে কলেজ যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। ওদের বাড়ি ক্রস করবো তখনই ওর ছোট ভাই নেতাই এসে বলে, অনিন ভাই, শুনিছেও কিছু? আমি নেতাই কে বলি, কি শুনবো নেতাই? নেতাই আমাকে যেটা বলে তা শোনার জন্য আমি কখনোই প্রস্তুত ছিলাম না। ছোট মানুষ। কি নির্মম কথাটা কি সহজে বলতে পারে। যা আমি কখনোই বলতে পারতাম না। বলে……। বলে রাহুল আর নাই। অনিন ভাই রাহুল দাদা আর নাই। আজ রাত বার টার সময় মরি গেছে৷

আমি যেন এক মুহূর্তের জন্য হিতাহিত জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়ি। বাকরুদ্ধ হয়ে যায় কয়েক মুহূর্তের জন্য। নেতাইকে কি বলবো বুঝতে পারি না।

 

ভাই হারানোর ব্যথা কি নেতাইকে স্পর্শ করেনি নাকি নেতাই বুঝতে পারছে না, রাহুল আর কখনো ফিরে আসবে না। আমি নেতাইকে জড়িয়ে ধরি। তখনই নেতাই হঠাৎ হাউমাউ করে কাঁদে। আমি আর চোখের জল ধরে রাখতে পারি না। একটা পরিবার নিমিষেই নিমজ্জিত হয়ে যায়। যাকে ঘিরে পরিবারের সবাই স্বপ্ন বুনতো সেই তারাই কি না স্বপ্ন দেখানোর মানুষটাকে চিরতরে হারিয়ে ফেলে। সব স্বপ্ন, সব আশা নিমিষেই ধূলিসাৎ হয়ে যায়। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে যায় দীর্ঘদিন ধরে নিঃশব্দে বুকের মধ্যে লালন করা স্বপ্নগুলো৷ সেদিন আমি দেখেছি নিজের চোখে একটা পরিবারের অসহায়ত্ব। কি নিদারুণ কি বিভৎস সেই দৃশ্য।

জানো উপমা! আমার মাঝে মাঝে রাহুলকে খুব মনে পড়ে। ছোট থেকে এক সাথে বড় হয়েছি। এক সাথে স্কুলে যেতাম। এক সাথে খেলাধুলা করেছি। রাহুলের কথা মনে হলে বুকের ভেতরটা কেমন হুহু করে ওঠে।

অনিন……। আমরা ছোট বেলার বন্ধুদেরকে কেন জানি ভুলতে পারি না। তাই না!

হয়তো প্রকৃতিই তা হতে দেয় না। উপমা, রাহুল যেদিন মারা যায় ঠিক তার আগের দিনও আমার সাথে কথা হয়। একদম স্বাভাবিক মানুষের মতো কথাবার্তা। অনেক ক্ষণ আমরা কথা বলি। সব থেকে বড় নির্মমতা কি জানো উপমা? রাহুল যেদিন মারা যায়, সেদিনও আমাকে ফোন দিয়েছিল। রাত নয়টার দিকে। আমি অফলাইনে থাকায় আর ওর সাথে আমার কথা হয়নি। কে জানতো আজই রাহুলের জীবনের শেষ দিন। শেষ কয়েকটা মুহূর্ত। সেটাই শেষ ফোন। সেটাই শেষ কথা আমাদের। হয়তো সেদিন রাহুল কিছু বলার জন্যই শেষ বারের মতো আমায় ফোন করেছিল। কিন্তু কথা আর হয়নি৷ আর কখনোই কথা হবে না। রাহুল কোন দিনই জানবে না, কেউ এখনো মাঝে মাঝে তাকে মনে করে! রাহুল যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক। ভাগ্য কি নির্মম তাই না উপমা!

 

অনিন আমরা কখনো কখনো দীর্ঘশ্বাসের সাথে উড়িয়ে দিই নির্মম বাস্তবতার কড়াঘাত। রাত পোহালে নতুন ভোরে ঘুরে দাড়াই নতুন কোন দীর্ঘশ্বাসের সাথে মুখোমুখি হওয়ার জন্য। তার পর বুক পকেটে নতুন কোন দুঃখ নিয়ে ঘুরি এথা থেকে ওথা। রাত গভীর হলে দুঃখগুলোর সাথে হিসেব মিলাই জীবনের সঞ্চয়। এই যে চাঁদ তার সবটা আলো রাত্রি হলেই মেলে দেয় নশ্বর এই পৃথিবীতে। তারও দুঃখ আছে। কে রাখে তার খোঁজ। অথচ তার আলোয় মানুষ নিত্য নতুন স্বপ্ন বুনে প্রিয় মানুষদের নিয়ে। এতেই বা কম কি চাদের কাছে। নিজের সবটা দিয়ে গড়ে দেয় মানুষের ক্ষুদ্র জীবনের ছোট ছোট সঞ্চয় গুলোকে। ছোট ছোট স্বপ্ন মুঠোবন্দী করতে শেখায়৷

আজকের জোছনার উপচে পড়া গৃহত্যাগী আলোয় আমাদের মতোই হয়তো কেউ না কেউ বিভোর নতুন কোন জীবনের পথে হাতে হাত রেখে মুখোমুখি। এই বা কম কি চাদের। এই যে অনিন্দ্য সুন্দর এটা তো চাদের হাসি আমাদের মতো কাপলদের জন্য বিলিয়ে দেয়। সত্যি বলতে কি জানো অনিন! যে গড়তে জানে তার উঠোন আজীবন খালি থাকে। আমরা কি কখনো জানতে চেয়েছি চাঁদের মন খারাপের কারণ। অথচ চাদের সমস্ত সঞ্চয় এই নশ্বর পৃথিবীর জন্য। এই নশ্বর পৃথিবীর মানুষের জন্য। আমরা চাদের সৌন্দর্য নিয়ে বিভোর থাকি। চাদেরও যে কষ্ট আছে তা কখনো জানতে চাই না।

কিছু মানুষকে আমরা আমৃত্যু মনে করি অথচ সে কখনো জানে না। হয় কখনো তাকে জানতে দিই না অথবা এই নশ্বর পৃথিবী তাকে জানতে দেয় না।

অনিন আর কিছুক্ষণ পর আজান দিবে। প্রায় ভোর হয়ে আসছে। চলো ঘরে চলো।

হ্যাঁ চলো। কখন যে রাত শেষ হলো…..।

 

কিছু মানুষ আমাদের মনের গোপন ঘরটাতে আমৃত্যু রয়ে যায়। ধূলোপড়া স্মৃতিতে আটকে থাকে সংগোপনে। কখনো সখনো উঁকি দেয় তবুও হঠাৎ মনে পড়লে দীর্ঘশ্বাস জমাই।

রাহুল হয়তো অনিনের মনে আজীবন রয়ে যাবে। বন্ধুর প্রতি বন্ধুর নিখাদ টানে। ভালো থাকুন পৃথিবীর সব বন্ধু। অভিমানে যে বন্ধু দূরে আছে সেই বন্ধু কখনো জানবে না এখনো তার জন্য অপেক্ষায় থাকে দীর্ঘশ্বাসের সাথে আঁড়ি কেঁটে। হয়তো অনিনরা অপেক্ষাতেই সুন্দর…..।

 

আরো পড়ুন- নিষিদ্ধ ভুবন গল্প