কবি রুশিয়া জামান রত্নার সাক্ষাৎকার
কেমন আছেন ?
ভালো আছি। ধন্যবাদ।
লেখালেখির শুরুটা কিভাবে?
রুশিয়া জামান রত্না : ছোট বেলা থেকেই আমি প্রচুর বই পড়তাম। যতদূর মনে পড়ে প্রাইমারি স্কুল থেকেই আমার বই পড়ার অভ্যাস। বাড়ির পাশে ব্র্যাকের একটি পাঠাগার ছিল। আমি প্রতি সপ্তাহের একদিন সেই পাঠাগারে গিয়ে বই পড়তাম আর বই ধার নিতাম। এভাবে পড়ার অভ্যেস হয়। পরবর্তী সময়ে গ্রন্থ সমালোচনা দিয়েই আমার লেখার যাত্রা শুরু। এরপর ছোটগল্প এবং কবিতা প্রকাশিত হয়। এছাড়াও নারীদের সাফল্য নিয়ে আমার বেশ কিছু ফিচার জাতীয় দৈনিকে প্রকাশ পেয়েছে। আমার প্রিয়জনদের উৎসাহেই নিয়মিত লিখে যাচ্ছি ।
প্রকাশিত বইগুলো নিয়ে কিছু বলুন
রুশিয়া জামান রত্না : আমি এখন পর্যন্ত কোন বই প্রকাশ করিনি। যদিও বেশ কয়েকবার বই প্রকাশ করার বিষয়ে অনুরোধ পেয়েছি। তবে আমি আরও একটু সময় নিতে চাই।
এখন কি লিখছেন?
রুশিয়া জামান রত্না: এখন একটি ছোটগল্প লিখছি। পাশাপাশি কবিতা ও হাইকু চর্চা অব্যাহত আছে ।
আপনার কবিতার বিষয়বস্তু বা উপজীব্য নিয়ে বলুন।
রুশিয়া জামান রত্না : প্রকৃতি, প্রেম, বিরহ, সমাজচিত্র, আমার হৃদয়ের একান্ত কিছু বিশেষ অনুভূতি আমার লেখার উপজীব্য।
আসন্ন বইমেলার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাই
রুশিয়া জামান রত্না: বেশ কিছু বই কিনবো। লেখকদের সাথে আড্ডা দিবো।
পাঠকদের থেকে একজন কবির প্রত্যাশা কি থাকে? আপনার ক্ষেত্রে তার প্রভাব কি?
রুশিয়া জামান রত্না : একজন কবি হিসেবে পাঠকের কাছে বরাবরই কবিতাটি নিয়ে আলোচনা সমালোচনা ও মতামত প্রত্যাশা করি। আমার কবিতা নিয়ে আলোচনা হলে তা আমাকে দারুণ প্রভাবিত করে । লেখালেখির প্রতি উৎসাহ বাড়িয়ে দেয়।
প্রকাশকদের ব্যাপারে আপনার মন্তব্য চাই।
রুশিয়া জামান রত্না : বাংলাদেশে প্রকাশক আর ছাপাখানার মধ্যে কি পার্থক্য তা আমি বুঝি না। লেখালেখি আর বিপনন দুটো আলাদা বিষয়। বিপননের দায়িত্ব নেয়া লেখকের জন্য অস্বস্তিকর। প্রকাশকদের ব্যবসায়ীক মনোভাব থেকে বের হয়ে এটাকে সৃজনশীল কাজ হিসেবে নিলে তা বাংলা সাহিত্যের জন্য মঙ্গল হবে।
কবির কি স্বীকৃতি প্রয়োজন আছে? কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা ব্যাপারটিকে কিভাবে দেখেন?
রুশিয়া জামান রত্না: স্বীকৃতি অবশ্যই উৎসাহ বাড়ায়। প্রতিষ্ঠা আর কবি হিসেবে প্রতিষ্ঠা কিন্তু এক নয়। তবে, যদি একজন কবি নিজের আত্মতৃপ্তির জন্য লিখেন তাহলে স্বীকৃতির বিষয়টি তার কাছে মূখ্য নয়।
লোকে বলে কবিরা ভাতে মরে- এ নিয়ে কিছু বলুন
রুশিয়া জামান রত্না: কথাটা সঠিক। শুধুমাত্র কাব্য চর্চা করে জীবিকা নির্বাহ করা সম্ভব নয়। অনেক কবিই রাজ আনুকুল্য পেয়ে নিশ্চিন্তে কাব্য চর্চা করেছেন একসময়। কিন্তু বর্তমানে কবিতা বা গল্প উপন্যাস লিখে জীবিকা নির্বাহ করা খুবই কঠিন। কবিতাকে প্যাশন বা অনুরাগে ধারণ করতে হবে।
একজন লেখক কবির জন্য পড়াশোনা (সাহিত্য পাঠ) কতটুকু জরুরী?
রুশিয়া জামান রত্না : পড়াশোনা অবশ্যই জরুরী। এ বিষয়ে শশী থারুরকে আমি গভীরভাবে অনুসরণ করি। তার একাধিক বক্তব্যে তিনি বলেন, যদি আপনি লিখতে চান আপনাকে অবশ্যই পড়তে হবে। যত বেশি পড়বেন তত ভালো লিখতে পারবেন।
নিজের লেখালেখি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা, প্রাপ্তি, প্রত্যাশা জানতে চাই।
রুশিয়া জামান রত্না: ভবিষ্যতে বই প্রকাশ করার ইচ্ছে আছে। নিজেকে একজন কবি ও লেখক এবং সাহিত্য সমালোচক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
যারা লিখতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।
রুশিয়া জামান রত্না : সাহিত্য চর্চা উপভোগ করুন। হৃদয়ের কথা শুনুন। হৃদয়ের অনুভূতিগুলোই সাহিত্যের আকারে প্রকাশিত হয়। যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততায় বই এনে দিবে একমুঠো সুখের অনুভূতি।
*রুশিয়া জামান রত্না- কবি ও গল্পকার। সমাজসেবা অফিসার, মানিকগঞ্জ।
আরো পড়ুন- টিটো মোস্তাফিজের সাক্ষাৎকার