শিশির আজম এর কবিতাগুচ্ছ
পহেলা বৈশাখের টেবিল
টেবিলটা তিনদিন খায়নি, বিশ্রামও পায়নি। আজ পহেলা বৈশাখ
আজ ও কথা বলবে, ঘোরাফেরা করবে
পুরনো ডাকটিকিটটা আড়াল করে
যেটা গতবছর হারিয়ে গিয়েছিল, সম্ভবত নতুন কেটে রাখা
গাছের তাজা কোন গুড়ির নিচে।
কিন্তু ওর দেহের ত্বকের ভেতর থেকে ভেসে ভেসে উঠছে
চিত্রবিচিত্র
সুডৌল
তীক্ষ্ণ
একেকটা রেখা, অনেকানেক রেখা।
এরা
এই রেখাগুলো
এরা তো মারাত্মক সেন্সুয়াল, না কি এন্টিক্লাসিক!
ভোর রাতের স্বপ্ন
ভোর রাতের দিকে স্বপ্নটা দেখলাম
তড়িঘড়ি বিছানা ছেড়ে
টেবিলে গিয়ে বসলাম
ওটা লিখে ফেলা দরকার
কিন্তু কোন প্রত্যাশাই আর থাকবে না
শেষ অব্দি
যদি ওটা কবিতায় পর্যবসিত হয়
ইতোপূর্বে এরকম হতাশাজনক ঘটনা তো ঘটেছে
বারবার
আর নির্লজ্জের মতো
আমরা ঘুমিয়ে পড়েছি
আবার
দুর্লভ এক স্বপ্নের আকাঙ্ক্ষায়
কেন আমরা দাঁড়ায়ে আছি
কোথাও যাবো বলে
একটার পর একটা ট্রেন ছেড়ে দিচ্ছি নিতান্ত অবিবেচকের মতো
না কি কোন জোনাকপোকার স্বরলিপি
অথবা পৌষের ডাকটিকিটবিহীন ছিপছিপে কালো মেঘ
উড়ে যাচ্ছে
অবিকল ট্রেনের মতো দূরের কোন এক দীপ্তকমিউন হাসপাতালের দিকে
ভিখিরিগুলো গায়ের ওপর এসে পড়ছে
বাদামওলা আমাকে বাদাম না দিয়ে
বাদামের মুচমুচে ত্বক কামড়াতে লাগলো
কামড়াতে লাগলো নিতান্ত অবিবেচকের মতো নিজের দাঁতে
এভাবে
এভাবে দাঁড়িয়ে থাকার মানে হয় না
আচ্ছা সবকিছুরই বা মানে থাকতে হবে কেন
লেখক হতে চাওয়ার বিপদ
লেখক হবার জন্য আসলে কোন টেবিল দরকার হয় না
গাদা গাদা বইই বা কেন গিলতে হবে
ব্লাক ওয়াইন আর বৃষ্টিধোয়া আকাশ
অথবা
আনকোরা আর বোকাসোকা ইয়াং একটা মেয়ে
অথবা
এক শনিবার জোসনায় ভাসতে থাকা পাহাড়
তাহলে কী দরকার
আমি তোমার কমনীয় আর ঘামচিকচিকে ঘাড়ের নিচে
ঘাড়ের ঠিক নিচে
কামড়ে দেবো
নিঃসঙ্কোচে
কামড়ে ধরে রাখবো
যতক্ষণ না তোমার রক্ত আমার রক্তের দেখা পায়
কে সত্যিকার জানোয়ার
কোন কোন বই
জানোয়ারের মতো আচরণ করে
গোদারের বিষম ইমেজ
জয়নুলের ক্রেজি ব্ল্যাক ব্রাশস্ট্রোক
এক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে সাবধান হতে হয়
সে
তৈরি করে সেন্সর বোর্ড
সে
নির্দেশনা দেয় পুলিশকে
সে শংকিত
তার সভ্য নাগরিকগণের আচরণে
জানোয়ারসুলভ লক্ষণ দেখা যাচ্ছে কি না
এখন আপনাকে বলতে হবে
কে
কে সত্যিকার জানোয়ার
art না state
আরো পড়ুন- টিটো মোস্তাফিজের হেমন্তের পদাবলি